হোম > ফ্যাক্টচেক

নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে জামায়াত আমিরের গোপন বৈঠক! এমন খবর ছাপেনি আনন্দবাজার 

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের পতন–পরবর্তী সময়ে আলোচনায় দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী। অভ্যুত্থানের পর দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কও নিয়েছে নতুন মোড়। এমন প্রেক্ষাপটে ভারতের বাংলা ভাষার সংবাদমাধ্যম দৈনিক আনন্দবাজারের প্রিন্ট সংস্করণের একটি প্রতিবেদনের ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

এতে দাবি করা হচ্ছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের গোপন বৈঠক হয়েছে। প্রতিবেদনটির শিরোনাম, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মুদির সাথে বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর আমিরের গোপন বৈঠক!’ প্রতিবেদনে ভারতের নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবনের সামনে নরেন্দ্র মোদি ও শফিকুর রহমানের দাঁড়িয়ে থাকা একটি ছবিও ব্যবহার করা হয়। 

কথিত প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি খুবি খারাপ তাই দেশের সংকট মোকাবিলায় নতুন নির্বাচিত সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে দেশটিতে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চেয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. শফিকুর রহমান। তিনি উমরাহ পালন শেষে গত রাতে ভারতের নয়াদিল্লিতে রাতের ফ্লাইটে আসেন। তারপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মুদির সহকারী সচিবের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎ করেন।’ 

প্রতিবেদনটি প্রকাশের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর। এই তারিখের সূত্রে আনন্দবাজার পত্রিকার ই–পেপারের ওয়েবসাইটে গত ১৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত প্রিন্ট সংস্করণ খুঁজে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ডা. শফিকুর রহমানের বৈঠক নিয়ে কথিত প্রতিবেদনটি পাওয়া যায়নি। তবে প্রিন্ট সংস্করণটির প্রথম পৃষ্ঠার সঙ্গে ফেসবুকে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ডা. শফিকুর রহমানের গোপন বৈঠক প্রসঙ্গে প্রকাশিত সংবাদ ব্যতীত অন্যান্য অংশের অবিকল মিল রয়েছে। এ থেকে ধারণা করা যায়, কথিত প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার প্রকাশ করেনি। সংবাদমাধ্যমটির প্রিন্ট সংস্করণ বিকৃত করে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ডা. শফিকুর রহমানের গোপন বৈঠকের সংবাদটি তৈরি করা হয়েছে। 

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া প্রতিবেদনটির সত্যতা যাচাইয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি আনন্দবাজার পত্রিকার রাজনৈতিক সম্পাদক সন্দীপন চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি এএফপিকে বলেন, ‘আনন্দবাজার এমন কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। ছবিটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ডা. শফিকুর রহমানের গোপন বৈঠকের সংবাদটি পত্রিকায় আলাদাভাবে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নরেন্দ্র মোদি ও ডা. শফিকুর রহমানের ছবিটিও কৃত্রিমভাবে বসানো হয়েছে।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবিটি তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পোস্ট করা হয়। ছবিটিতে নরেন্দ্র মোদির পাশে শেখ হাসিনাকে দেখা যায়। ওই সময় শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিশেষ আমন্ত্রণে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারত সফরে যান। 

ভুয়া প্রতিবেদনটিতে ডা. শফিকুর রহমানের যে ছবিটি দেখা যাচ্ছে, সেটিও নরেন্দ্র মোদির। মূলত ছবিটিতে নরেন্দ্র মোদির ধড়ের ওপর ডা. শফিকুর রহমানের  মাথা বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে তাঁদের সম্পাদিত ছবি দুটি নিয়ে ভারতের নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবনের সামনে স্থাপন করা হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা factcheck@ajkerpatrika.com

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

পাকিস্তানি জেনারেলকে ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলযুক্ত বাংলাদেশের পতাকা উপহারে’র দাবি নিয়ে যা বলল সিএ ফ্যাক্ট চেক

অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

গোপালগঞ্জ সহিংসতা নিয়ে অসম্পর্কিত ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে আ. লীগ: প্রেস উইং

নিহত সোহাগকে হিন্দু দাবি করে মিথ্যা প্রতিবেদন করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম: প্রেস উইং

নাটকের দৃশ্যকে ধর্ষণের পর হত্যা দাবিতে প্রচার

পটুয়াখালীতে তরুণীকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার ভাইরাল ভিডিও সম্পর্কে যা জানা গেল

ইন্দুরকানীতে দেবর-ভাবিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাটি কি রাজনৈতিক

ইটভাটায় যুবক ও চিতাবাঘের লড়াইয়ের ভিডিও বাংলাদেশের নয়, ভারতের