হোম > ফ্যাক্টচেক

ঢাবির অধ্যাপক আব্দুল বাছিরের পদত্যাগকে ‘হিন্দু নির্যাতন’ বলে প্রচার

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক হিন্দু অধ্যাপককে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন পদত্যাগে বাধ্য করেছেন—এমন দাবিতে একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) ‘বাংলাদেশ হিন্দু নির্যাতন’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ১ মিনিট ৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। পোস্টটিতে দাবি করা হয়, ‘প্রথমে হিন্দু অধ্যাপককে কোরআনের আয়াত পাঠ করে শোনানো হয়েছে, তারপর ওনার পদত্যাগ নেওয়া হয়েছে।’ 

ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, একদল তরুণ একটি কক্ষে এক ব্যক্তিকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। সেখানে আরেক তরুণ কোরআন থেকে তেলাওয়াত করছেন। ভিডিওটি আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ৩ লাখ ২২ হাজার বার দেখা হয়েছে, শেয়ার হয়েছে ২ হাজারের বেশি। পোস্টটিতে রিয়েকশন পড়েছে প্রায় ৫ হাজার। ভারত থেকে পরিচালিত বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও একই দাবিতে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভাইরাল পোস্টে হিন্দু অধ্যাপক দাবি করা ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষে মুসলিম, তাঁর নাম অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক। সম্প্রতি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির কলা অনুষদের ডিন থেকে পদত্যাগ করেছেন। ভাইরাল ভিডিওটি ওই পদত্যাগের ঘটনার। এ নিয়ে গত সোমবার (১৯ আগস্ট) ‘পদত্যাগ করলেন ঢাবির কলা অনুষদের ডিন’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে আজকের পত্রিকা

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ঢাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির পদত্যাগ করেছেন। সোমবার দুপুরে উপাচার্য বরাবর লিখিত পদত্যাগপত্র দেন তিনি।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী ডিন অফিসের সামনে অবস্থান নিয়ে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। সেখানে অবস্থান করা এক শিক্ষার্থী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত রমজান মাসকে স্বাগত জানিয়ে আরবি বিভাগের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী কোরআন তিলাওয়াতের আয়োজন করে। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আরবি বিভাগের চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দেন কলা অনুষদের ডিন আব্দুল বাছির। আমরা তাঁর পদত্যাগ দাবিতে এখানে এসেছি।’ 
 
ঘটনাস্থলে থাকা শিক্ষার্থীরা আজকের পত্রিকাকে জানান, আব্দুল বাছির পদত্যাগের পর পবিত্র কোরআন থেকে সুরা ত্বীন পাঠ করা হয় এবং মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত ও কোরআন পাঠে আব্দুল বাছিরও অংশ নেন। এ বর্ণনার সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওটির মিল রয়েছে। 

সুতরাং, এটি স্পষ্ট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল ঢাবির হিন্দু অধ্যাপককে কোরআন তেলাওয়াত শুনিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করার দাবিটি সঠিক নয়। 

প্রসঙ্গত, গত রমজানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় রমজান মাসকে স্বাগত জানিয়ে কোরআন তেলাওয়াত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়টির আরবি বিভাগের একদল শিক্ষার্থী। পরে এ আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের ‘কেন শাস্তি প্রদান করা হবে না’—এই মর্মে লিখিত বক্তব্য চেয়েছিলেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির। আরবি বিভাগের চেয়ারম্যান জুবায়ের মুহাম্মদ এহসানুল হকের কাছে এই লিখিত বক্তব্য চেয়ে নোটিশ দেওয়া হয়। পরে এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা factcheck@ajkerpatrika.com

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

পাকিস্তানি জেনারেলকে ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলযুক্ত বাংলাদেশের পতাকা উপহারে’র দাবি নিয়ে যা বলল সিএ ফ্যাক্ট চেক

অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

গোপালগঞ্জ সহিংসতা নিয়ে অসম্পর্কিত ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে আ. লীগ: প্রেস উইং

নিহত সোহাগকে হিন্দু দাবি করে মিথ্যা প্রতিবেদন করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম: প্রেস উইং

নাটকের দৃশ্যকে ধর্ষণের পর হত্যা দাবিতে প্রচার

পটুয়াখালীতে তরুণীকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার ভাইরাল ভিডিও সম্পর্কে যা জানা গেল

ইন্দুরকানীতে দেবর-ভাবিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাটি কি রাজনৈতিক

ইটভাটায় যুবক ও চিতাবাঘের লড়াইয়ের ভিডিও বাংলাদেশের নয়, ভারতের