হোম > ছাপা সংস্করণ

মাফিয়া আতঙ্কে বলিউড

১৯৯৭ সালের ঘটনা। প্রকাশ্যে মন্দিরের সামনে হত্যা করা হয় গুলশান কুমারকে। প্রথম গুলিটাই লেগেছিল কপালে। নিশ্চিত মৃত্যু। পোস্টমর্টেমে এই বলিউড প্রযোজকের শরীর থেকে ১৬টি বুলেট পাওয়া যায়। গ্যাংস্টার আবু সালেম হুমকি দিয়েছিলেন টাকা না পেলে ১৬টি গুলি তাঁর শরীরে থাকবে, তাই হয়েছে। ২০০০ সালে মুক্তি পায় হৃতিক রোশনের ‘কহো না পেয়ার হে’। ব্লক বাস্টার হিট। সিনেমা মুক্তির এক সপ্তাহের মাথায় হৃতিকের বাবা পরিচালক রাকেশ রোশনের ওপর দুজন অস্ত্রধারী হামলা চালায়। তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালানো হয়। রাকেশ রোশন সেই যাত্রায় প্রাণে বেঁচে যান। রাকেশ তখন বলেন, ‘অস্ত্রধারীরা তাঁকে খুন করতে আসেনি। যদি আসত, তাহলে মেরে ফেলতে পারত সহজেই। তারা এসেছিল তাঁকে আহত করতে। সেই সঙ্গে গোটা বলিউডের জন্য একটা সতর্কসংকেত পাঠাতে।’

এই সতর্কতা বলিউডের সবচেয়ে ভয়ানক ব্যাধি। এই ব্যাধিটা এক দিনে জেঁকে বসেনি। ১৯৭০ সালে ভারত সরকার বলিউডকে ব্যাংক থেকে ঋণ দেওয়া বন্ধ করে দেয়, এটা চলে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত। ওই সময়টাতে সরকার বলিউডকে ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে গণ্য করত না। ফলে ব্যাংকঋণও পাওয়া যেত না। সুযোগটা নেন মাফিয়ারা। পরিচালকেরা তখন বিভিন্ন প্রাইভেট কোম্পানি, ধনী ব্যক্তিদের দ্বারস্থ হন। এ সময়টাতেই বলিউডে মাফিয়াদের উত্থান। হাজি মাস্তান, দাউদ ইব্রাহিম, আবু সালেম, অরুণ গাওলী, ছোটা শাকিল, ছোটা রাজনরা গেড়ে বসেন বলিউডে। তাঁদের কাছে কালোটাকার অভাব ছিল না। সিনেমায় লগ্নি করে দ্রুত ফেরতও পাওয়া যেত। পাশাপাশি চলত আরও অনেক ফায়দা লোটা।

মাফিয়া ও বলিউড হাতে হাত ধরে চলছিল। ১৯৯৯ সালে সিনেমার ওপর থেকে ভারত সরকার ব্যাংকঋণের খড়্গ তুলে নেয়। ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে স্বীকৃতি পায় বলিউড। প্রযোজকের সংখ্যা বাড়তে থাকে। স্বার্থে টান পড়ে মাফিয়াদের। তাঁরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। বলিউড তারকাদের অনেকের সঙ্গেই তখনো সখ্য ছিল মাফিয়াদের। নীরবে কেউ কেউ এই সম্পর্ক জিইয়ে রেখেছেন। মাফিয়াদের হুমকির মুখে পড়েন অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খান, বোমান ইরানি, সোনু সদ, সনু নিগমসহ অনেকেই। কালের পরিক্রমায় এই মাফিয়াদের অনেকটাই দমন করতে সক্ষম হয়েছে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কেউ এনকাউন্টারে মারা পড়েছেন, কেউ জেলে, কেউবা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।

গত ২৯ মে পাঞ্জাবি র‌্যাপার সিধু মুজ ওয়ালার হত্যাকাণ্ডে নতুন করে আলোচনায় আসে মাফিয়াভীতি। হত্যার দায় স্বীকার করেছেন গোলডি ব্রার নামের এক গ্যাংস্টার। তিনি থাকেন কানাডায়। ‘কথামতো কাজ হয়নি’ বলে শরীরে ১৫টি বুলেট নিতে হলো সিধুকে। সম্প্রতি মৃত্যুর হুমকি পেলেন বলিউড সুপারস্টার সালমান খান ও তাঁর বাবা সেলিম খান। অজ্ঞাতপরিচয় এক চিঠির মাধ্যমে মৃত্যুর হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন তাঁরা। ইতিমধ্যে সালমান খানের সার্বিক নিরাপত্তা বাড়িয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সালমান এর আগেও গোলডির বন্ধু লরেন্স বিষ্ণোইয়ের কাছ থেকে হত্যার হুমকি পান। সব মিলিয়ে আবারও শঙ্কিত হয়ে উঠেছে বলিউড, আবারও জেঁকে বসেছে মাফিয়া আতঙ্ক।

বিনোদন সম্পর্কিত পড়ুন:

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ