সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের চর জোকনালা গ্রামে হুড়াসাগর নদীর ওপর ৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে চলছে সেতু নির্মাণকাজ। কিন্তু নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই সেতুটির একটি পিলারের গোড়ায় ফাটল দেখা দিয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাতের আঁধারে ওই ফাটল মেরামত করতে গেলে গ্রামবাসী তাতে বাধা দিয়ে সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
চর জোকনালা গ্রামের রহমান আলী জানান, গত রোববার দিবাগত রাত ১টার দিকে নির্মাণাধীন সেতুর নিচে মোবাইল ফোনের আলো দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে চোর ভেবে কয়েকজন বাসিন্দা সেখানে উপস্থিত হন। ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন পালানোর চেষ্টা করলে তাঁদের ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। পরে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সেতুর পিলারের ফাটল মেরামত করতে এসেছেন তাঁরা।
রাতের আঁধারে সেতুর কাজ করতে আসার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজমিস্ত্রি শফিকুল ও স্বাধীন জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২০ হাজার টাকার চুক্তিতে রাতের বেলায় বালু ও সিমেন্ট দিয়ে পিলারের ফাটলের স্থান মেরামত করতে এসেছিলেন তাঁরা।
স্থানীয় ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল ইসলাম তুহিন জানান, সেতুটি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বেলকুচি উপজেলা এলজিইডি অফিসের সার্ভেয়ার রোকনুজ্জামান বলেন, ‘২০২১ সালে সেতুটির নির্মাণকাজ কাজ শুরু হয়। দায়িত্বরত উপসহকারী প্রকৌশলী অন্যত্র বদলি হওয়ায় ২০২৩ সাল থেকে আমি নির্মাণকাজ দেখভাল করছেন। সেতুর যে পিলারটি ক্ষতিগ্রস্ত সেটি আগেই নির্মাণ করা হয়েছিল। যখন পিলারটি নির্মাণ হয়েছে, তখন সেখানে অনেক পানি ছিল। বর্তমানে পানি কমায় ফাটলের স্থানটি নজরে আসে। গ্রামবাসীর বাধার কারণে গত শুক্রবার থেকে নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাগর কনস্ট্রাকশনের প্রোপ্রাইটর নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের লাইসেন্স ব্যবহার করে জহুরুল ইসলাম নামের এক ঠিকাদার সেতুটির কাজ করছেন। বর্ষা মৌসুমে স্টিলের ফর্মা দিয়ে পিলার ঢালাই করার সময় সমস্যাটি দেখা দিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে প্রকৌশলীদের পরামর্শে পানি সেচে পিলারটি মেরামত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। গ্রামবাসী এ কাজে বাধা দিতে পারেন—এ জন্য পিলারটি মেরামতের জন্য রাতে মিস্ত্রি পাঠানো হয়েছিল।’
সিরাজগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হুড়াসাগর নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর পিলারের সমস্যার কথা শুনেছি। সরেজমিন গিয়ে বিষয়টি দেখব, তারপর প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।’