ব্রিটেনের বাসিন্দাদের রেকর্ড গরম গ্রীষ্মকালের অভিজ্ঞতা হচ্ছে। অস্বাভাবিক তাপমাত্রায় হিটস্ট্রোকে অসুস্থ এমনকি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। তবে এর মধ্যে উদ্যান চাষিরা অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছেন। তাঁদের বাগানে ফলছে ডুমুর, অ্যাভোকাডো এবং তরমুজের মতো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ফল।
উদ্যান চাষিরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে ব্রিটেনে ভূমধ্যসাগরীয় এবং উপ-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ফসলের বেশ ভালো ফলন হচ্ছে। তবে বিশেষ করে এ বছরের ফলনে তাঁরা বিস্মিত।
বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগে উদ্ভিদের যেসব জাতকে মূলত বাড়িতে চাষের উপযোগী বা হাউস প্ল্যান্ট হিসেবে বিবেচনা করা হতো, সেগুলো এখন বাড়ির বাইরেও ভালো ফল দিচ্ছে। যেখানে ব্রিটেনের ব্যক্তিগত বাগানগুলোর ঐতিহ্যবাহী উদ্ভিদগুলো গরম আবহাওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে পারছে না।
রয়্যাল হর্টিকালচারাল সোসাইটি (আরএইচএস) ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, আর্দ্র শীতকাল এবং উষ্ণ ও শুষ্ক গ্রীষ্মকালে বৃষ্টিপাতের পরিবর্তনশীলতা আরও কিছু বিদেশি উদ্ভিদের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করবে। তবে সেই সঙ্গে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, ভবিষ্যতে পানির সংকট গাছপালার বৃদ্ধি হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
ইংল্যান্ডের উত্তরের বাগানগুলোতে ২০২০ সাল থেকে উপ-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় উদ্ভিদ চাষ করতে দেখা যাচ্ছে। এই অঞ্চলে রয়্যাল হর্টিকালচার সোসাইটির বাগানের কিউরেটর রাসেল ওয়াটকিনস বলছেন, ১৭ বছর আগে এখানে কাজ শুরু করেন। শক্ত গুল্ম এবং বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদের একটা মিশ্রণ আছে এই বাগানে। তিনি বলছেন, আমরা চাষের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে গেছি। এখানে রাইস পেপার প্ল্যান্টের মতো ক্রান্তীয় উদ্ভিদের বিশাল পাতা বিকশিত হতে দেখছি। কয়েক বছর আগেও এই উদ্ভিদ এখানে বাঁচত না।
কলা, বিভিন্ন প্রজাতির ডালিয়া এবং আদার কিছু প্রজাতি এখন শীতকালেও বেঁচে থাকছে। আর এ বছর রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়ার মধ্যে এরা যেন হাসছে!
ব্রিটেনে অভিবাসীরাসহ কিছু লোকজন বহু বছর ধরে উপ-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং বিদেশি ফল ও শাকসবজি চাষ করার চেষ্টা করছেন। উত্তর লন্ডনে কৃষ্ণাঙ্গ নেতৃত্বাধীন একটি প্রকল্পের নাম ব্ল্যাক রুটজ। তাঁরা মিষ্টি আলু, বিদেশি স্কোয়াশ এবং টমাটিলো চাষ করছেন। এই গ্রুপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা পাউলেট হেনরি জানান, কয়েক দশক ধরে এসব সবজি চাষ করছেন। কিন্তু সম্প্রতি গরম গ্রীষ্মকালে তাঁদের বাগানের ফলন বেড়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা এও সতর্ক করছেন, এ বছরের মতো গরম ও শুষ্ক গ্রীষ্মের ধারাবাহিকতা চলতে থাকলে ফসলের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।