অর্থ আত্মসাৎ ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী এবং তাঁর ভাই আলিসান চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। তবে মেহজাবীনের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। এই ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন অভিনেত্রী।
মেহজাবীন ও তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন আমিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মেহজাবীনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের পরিচয় আমিরুল ইসলামের। মেহজাবীন চৌধুরী তাঁর একটি ব্যবসায় অংশীদার হওয়ার প্রস্তাব দেন আমিরুল ইসলামকে। বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে মেহজাবীনকে নগদ অর্থ এবং বিকাশের মাধ্যমে ২৭ লাখ টাকা দেন আমিরুল ইসলাম। এরপর মেহজাবীন ও তাঁর ভাই দীর্ঘদিন ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ না নেওয়ায় বাদী টাকা ফেরত চান। বিভিন্ন সময় টাকা চাইতে গেলে আজ দেব, কাল দেব বলে কালক্ষেপণ করেন মেহজাবীন ও তাঁর ভাই। গত ১১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে পাওনা টাকা চাইলে তাঁরা ১৬ মার্চ হাতিরঝিল রোডের পাশে একটি রেস্টুরেন্টে আসতে বলেন। ওই দিন ঘটনাস্থলে গেলে মেহজাবীন, তাঁর ভাইসহ অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচজন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন আমিরুলকে। তাঁরা আমিরুলকে ধমক দিয়ে আর কখনো টাকা চাইতে নিষেধ করেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন।
এই ঘটনার পর গত ২৪ মার্চ বাদী হয়ে ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন আমিরুল ইসলাম। ১০ নভেম্বর মেহজাবীন ও তাঁর ভাই আলিসানের আদালতে হাজির হওয়ার দিন ধার্য ছিল। তাঁরা হাজির না হওয়ায় আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
গতকাল দুপুরে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার খবর প্রকাশ হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মেহজাবীন দাবি করেন, খবরটি ভিত্তিহীন। এ ধরনের কোনো ব্যবসার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। মেহজাবীন লেখেন, ‘একটি ভুয়া ও মিথ্যা মামলার সংবাদ দেখে আমি বিস্মিত। আমি মনে করি, বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গুজব ছাড়া কিছু নয়। এ ধরনের কোনো ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আমি সরাসরি বা পরোক্ষভাবে জড়িত নই। যে বা যাঁরা এমন ভিত্তিহীন মামলা করেছেন, তাঁদের কাউকে আমি চিনি না। আমি এমন কোনো ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে নেই, যেখানে আইনি জটিলতায় জড়ানোর প্রশ্ন আসে।’
মেহজাবীন আরও লেখেন, ‘একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি দেশের আইন, নিয়মনীতি ও সামাজিক দায়িত্বে বিশ্বাসী। ইতিমধ্যে আমার আইনজীবী যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন, যাতে এসব গুজব ও মিথ্যা প্রচারণা বন্ধ হয় এবং ভবিষ্যতে আর কেউ যেন এ ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়রানি করতে না পারে।’
এই ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এ আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন মেহজাবীন চৌধুরী ও তাঁর ভাই আলিসান। আদালত তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন মেহজাবীনের আইনজীবী তুহিন হাওলাদার।