হোম > শিক্ষা > ক্যাম্পাস

সায়মা হলের ১০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন করল আইইউবি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

সায়মা হলের ১০ বছরপূর্তিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত নারী শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে থাকা-খাওয়া এবং বিনা বেতনে মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দিতে ১০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (আইইউবি) হোস্টেল সায়মা হল। বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আইইউবির সায়মা হলই প্রথম আবাসিক হোস্টেল, যেখানে সুবিধাবঞ্চিত নারী শিক্ষার্থীদের জন্য এই সুযোগ রয়েছে।

শনিবার (২৯ নভেম্বর) ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত আইইউবি ক্যাম্পাসে সায়মা হলের এক দশক পূর্তি উপলক্ষে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সংগীত এবং নৃত্য পরিবেশন করেন সায়মা হলের একঝাঁক শিক্ষার্থী, যাঁরা আইইউবির বিভিন্ন বিভাগে পড়াশোনা করছেন।

ঢাকার বারিধারা জে-ব্লকে আইইউবির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এ মতিন চৌধুরীর পরিবারের দেওয়া নয়তলা ভবনের ওপরের পাঁচটি তলা এবং আটজন শিক্ষার্থী নিয়ে ২০১৫ সালে যাত্রা শুরু করে সায়মা হল। গত ১০ বছরে আবাসিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫০।

এটি পরিচালিত হয় এ মতিন চৌধুরীর পরিবারের স্থাপিত শহীদ খালেক অ্যান্ড মেজর সালেক বীর উত্তম ট্রাস্টের অর্থায়নে। হলের যাবতীয় কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করেন আইইউবির ট্রাস্টি সালমা করিম। তাঁর নির্দেশনায় কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটি।

এক দশক পূর্তি অনুষ্ঠানে এ মতিন চৌধুরী এবং সালমা করিম ছাড়াও বক্তব্য দেন আইইউবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান দিদার এ হোসেইন, ট্রাস্টি তৌহিদ সামাদ, ট্রাস্টি ওয়াজেদ আলী খান পন্নী, ট্রাস্টি রাশেদ চৌধুরী, উপাচার্য অধ্যাপক ম. তামিম এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড্যানিয়েল ডব্লিউ লুন্ড। আরও উপস্থিত ছিলেন ট্রাস্টি মোহাম্মদ তানভীর মাদার এবং ট্রাস্টি ড. হুসনে আরা আলী।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সায়মা হলের শিক্ষার্থীরা ১০০ শতাংশ বৃত্তি নিয়ে আইইউবিতে পড়াশোনা করেন। তাঁদের থাকা, খাওয়ার ও আসবাবের খরচ বহন করা হয় ট্রাস্টের পক্ষ থেকে। হলের বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ইন্টারনেটসহ রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বহন করে আইইউবি।

গত ১০ বছরে সায়মা হলে থেকে আইইউবিতে পড়াশোনা শেষ করেছেন প্রায় ৭০ জন নারী শিক্ষার্থী, যাঁরা সবাই এসেছেন দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এবং অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত পরিবার থেকে। সায়মা হলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অনেকে এখন দেশ-বিদেশে ব্যাংক, তথ্যপ্রযুক্তি ইত্যাদি খাতের নামী প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। অনেকে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইতালি, জার্মানি, জাপান ও মালয়েশিয়ায় গেছেন উচ্চশিক্ষার্থে।

হলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আতিকা হুমায়রা বলেন, ‘সায়মা হল শুধু একটি আবাসিক হল নয়, সায়মা হল একটি পরিবার। একটি নিরাপদ আবাস যেখানে কোনো বাধা-বিঘ্ন ছাড়াই প্রস্ফুটিত হওয়া যায়। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে আইইউবির ২৫তম সমাবর্তনে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের সেরা শিক্ষার্থীর পুরস্কার পেয়েছিলেন আতিকা হুমায়রা।’

হলের বর্তমান বাসিন্দা সায়মা বিনতে রাশিদ (গ্লোবাল স্টাডিজ অ্যান্ড গভর্ন্যান্স বিভাগ) বলেন, ‘ঢাকার বাইরে থেকে যারা আসে, তাদের জন্য সায়মা হল একটা বিরাট ভরসার নাম। এখানে নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে হয় না। পড়াশোনা এবং এবং নিজেকে গড়ে তোলা—দুটোই করা যায় নিশ্চিন্তে।’

সায়মা হলের ১০ বছরপূর্তিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নাচ পরিবেশন করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

অনুষ্ঠানে ট্রাস্টি এ মতিন চৌধুরী ঘোষণা করেন, নয়তলা ভবনের বাকি তলাগুলোও সায়মা হলকে দেওয়া হবে, যাতে আরও বেশিসংখ্যক সুবিধাবঞ্চিত নারী শিক্ষার্থীর জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা যায়।

হলের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তোমরা সবাই ঢাকার বাইরে থেকে এসেছ। যেখান থেকে এসেছ, সেখানকার মানুষকে ভুলে যেয়ো না। কারণ, তাদের প্রতি তোমাদের কর্তব্য আছে।’

ট্রাস্টি সালমা করিম বলেন, ‘আজকে আমরা শুধু একটি সময়ের মাইলফলক উদ্‌যাপন করছি না, এক দশক ধরে আমরা যে সুযোগ সৃষ্টি করে চলেছি, তা-ও উদ্‌যাপন করছি। আমরা উদ্‌যাপন করছি ক্ষমতায়নকে—যা অনেকের জীবন বদলে দিয়েছে। এই কাজে আমাদের সর্বদা সমর্থন দিয়ে চলেছে শহীদ খালেক অ্যান্ড মেজর সালেক বীর উত্তম ট্রাস্ট।’

ট্রাস্টি তৌহিদ সামাদ বলেন, ‘আজ সকালে আমি যখন এখানে এলাম, দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমার যত উদ্বেগ ছিল, তা নিমেষে মুছে গেল। আমি যেন আবার তারুণ্য ফিরে পেলাম। সায়মা হলকে দেখলে আমার মনে বিশ্বাস দৃঢ় হয় যে আমাদের এখনো আশা আছে। আইইউবির যে উৎকর্ষ, সমাজে আইইউবির যে অবস্থান, সায়মা হল তার প্রতিফলন।’

আইইউবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান দিদার এ হোসেইন বলেন, ‘সায়মা হল আইইউবির একটি রত্ন। এর মাধ্যমে আমরা সুবিধাবঞ্চিত নারী শিক্ষার্থীদের জ্বলে উঠতে সাহায্য করার সুযোগ পাচ্ছি, যাতে তারা নিজেদের জন্য সমাজে সম্মানজনক ও মর্যাদাপূর্ণ একটি জীবন গড়ে তুলতে পারে।’

ট্রাস্টি রাশেদ চৌধুরী বলেন, ‘সায়মা হল থেকে যতজন শিক্ষার্থী পাস করেছে, তাদের দেখলে মনে হয়, যেন জীবনে সত্যিকার ভালো কিছু করতে পেরেছি। ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছি যে কাউকে কিছু দেওয়ার মাঝে যতটা আনন্দ পাওয়া যায়, নেওয়ার মাঝে ততটা নয়। আজ আমি বুঝতে পারি, সেটা কতটা সত্যি।’

উপাচার্য অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, ‘সায়মা হল সেই অদৃশ্য দেয়ালটা ভাঙতে সাহায্য করে, যা সমাজ আমাদের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়। সায়মা হলের কারণে অনেক মেয়ে থাকা-খাওয়া থেকে শুরু করে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছে, যা না হলে হয়তো তারা এত দূর আসতে পারত না। আমি সায়মা হলের বর্তমান শিক্ষার্থীদের বলব, এ সুযোগটা পুরোপুরি কাজে লাগাও, নিজের জীবন গড়ে তোলো, পরিবারকে শক্তভাবে দাঁড়াতে সাহায্য করো, আর দেশের জন্যও অবদান রাখো।’

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড্যানিয়েল ডব্লিউ লুন্ড বলেন, ‘১০ বছর আগে যে উদ্যোগের সূচনা হয়েছিল, আজ তার ফল স্পষ্ট। সায়মা হলে গিয়ে আমি অনেক হাসিমুখ দেখেছি, ছাত্রীরা শান্তিতে আছে, আনন্দে আছে, আত্মবিশ্বাসীও। আমার আশা, তারা ভবিষ্যতেও একে অপরের সঙ্গে এই বন্ধনটা ধরে রাখবে। চাকরি হোক বা ব্যক্তিগত জীবন, সম্পর্কগুলো যেন টিকে থাকে অর্থবহভাবে।’

পরীক্ষা নিয়ে স্কুলে মুখোমুখি শিক্ষক-অভিভাবকেরা

শাবিপ্রবির ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, আবেদন শুরু ৮ ডিসেম্বর

ব্যাংকে ব্যবহৃত ১০টি ইংরেজি বাক্য: (পর্ব-১)

চীনের চংকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ অর্থায়িত বৃত্তি

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি: বাংলায় বাড়তি প্রস্তুতি চাই

সরকারি স্কুলে ভর্তির বয়স নিয়ে নতুন নির্দেশনা মাউশির

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ জারির দাবিতে লাগাতার অবস্থানের ডাক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে ২৮ ডিসেম্বর, অনলাইন ক্লাস বন্ধ হবে তার আগেই

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি: ৫ দফা দাবিতে ইডেনের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ফোসেপ প্রকল্প : কেনাকাটায় হাতখোলা মাউশি