আগামীকাল শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা। শেষ মুহূর্তে এসে অধিকাংশ শিক্ষার্থী এমসিকিউ সমাধানে পারদর্শী হলেও লিখিত প্রস্তুতিতে দুর্বল থেকে যায়। ফলস্বরূপ, লিখিত পরীক্ষায় কোনো একটি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়ে শেষ হয়ে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা। ভর্তি-ইচ্ছুকদের এই অন্তিম মুহূর্তে লিখিত অংশের প্রস্তুতি নিয়ে লিখেছেন মো. সৈয়দুর রহমান।
পদ্য ও গদ্যের গুরুত্বপূর্ণ পঙ্ক্তি বা উক্তির ব্যাখ্যা পড়া
মূল পাঠ্যবইয়ের গদ্য ও পদ্যগুলোর অন্তর্নিহিত অর্থ ও শব্দার্থ ভালো করে পড়তে হবে। অধ্যায়ের শেষে গুরুত্বপূর্ণ লাইনের যে ব্যাখ্যা দেওয়া থাকে, সেগুলো মুখস্থ করে ফেলতে হবে। অনেক সময় সমাস, সন্ধি বা উপসর্গসম্পর্কিত বিভিন্ন শব্দ গদ্য বা পদ্যের মধ্যে থাকে। সে শব্দগুলো ভালোভাবে পড়তে হবে। প্রতিটি ঘটনা বা উক্তি পড়ার সময় লেখক কোন প্রেক্ষাপটে ঘটনাটি বলেছেন, সেটির দিকে বিশেষ লক্ষ রাখতে হবে।
বানান ও যতিচিহ্নের দিকে মনোযোগ দেওয়া
বানান বিষয়টিতেই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থী কম নম্বর পায়। এখন পুরো বইটি আরও একবার এমনভাবে পড়তে হবে, যেন কঠিন বানানগুলো আরও একবার চোখে পড়ে। যেমন: মহীয়সী, মুহুর্মুহু, মনীষী। বানান লিখতে ভুল করলে অনেক ভালো লিখেও বেশি নম্বর পাওয়া সম্ভব নয়। তাই এদিকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। একই সঙ্গে বাক্য লেখার সময় এর যতিচিহ্নের যথার্থ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
বাক্যের গঠন, কাঠামো ও সুন্দর হাতের লেখা
ঢাবি ভর্তি পরীক্ষায় এমন অনেক শিক্ষার্থী অংশ নেয়, যাদের মেধা অত্যন্ত বেশি। তবে খাতায় সুন্দরভাবে গুছিয়ে লিখতে না পারায় তারা ভালো নম্বর থেকে বঞ্চিত হয়। ভালো নম্বর পেতে হলে লেখাকে প্যারা আকারে সাজাতে হবে। চেষ্টা করতে হবে লেখার মধ্যে কোনো কাটাকাটি যেন না হয়। লেখার সময় একই শব্দ দুবার ব্যবহার না করে একটু ভিন্ন শব্দের মাধ্যমে উপস্থাপন করলে সেটি ভালো নম্বর পেতে সাহায্য করে। যেমন: ডাকসু অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের উচিত এটিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা। এই লাইন এভাবে লিখলে বেশি নম্বর পাওয়া যাবে।
নির্মিতি অংশের জন্য প্রস্তুতি
নির্মিতি অংশে সৃজনশীল ও বিশ্লেষণধর্মী লেখায় পারদর্শী না হলে সাধারণত নম্বর পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। এই অংশে ভালো করার জন্য নবম-দশম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় পত্র অংশের সারাংশ বা সারমর্ম, ভাব সম্প্রসারণ, অনুবাদ, চিঠিপত্র অংশ ভালোভাবে পড়তে হবে। লেখার সময় বাস্তব জীবনের উদাহরণ সম্ভব হলে উল্লেখ করতে হবে। ইংরেজিতেও বারবার আসা টপিক যেমন প্যারাগ্রাফ, শর্টনোট ইত্যাদি লেখার জন্য মূল টেক্সটবুক আরও একবার রিভিশন দিতে হবে। ইংরেজির ক্ষেত্রে ভালো করার জন্য বাক্যের মধ্যে বিভিন্ন কানেক্টর যেমন: And, Or, But ব্যবহার করা উচিত।
এ মুহূর্তে নতুন টপিক না শেখা
শেষ সময়ে এসে নতুন কোনো বিষয় মুখস্থ করা যাবে না। অনেক শিক্ষার্থীর ভোকাবুলারি আর মুখস্থ হচ্ছে না, তাদের উচিত অন্য টপিকে দক্ষতা বাড়ানো। কারণ, একটি টপিক নিয়ে এখন আর বসে থাকার সময় নেই।
এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর সবার একই হবে। কিন্তু ফলাফলে বড় একটা পার্থক্য হয়ে যাবে লিখিত অংশের নম্বরে। তাই যাদের লিখিত অংশের প্রস্তুতি এখনো বাকি, তারা সম্পূর্ণরূপে এখন লিখিত পরীক্ষায় আসা টপিকে মনোনিবেশ করবে। আরেকটি বিষয় মনে রাখতে হবে, লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির সময়ও কিন্তু বিভিন্ন এমসিকিউ ও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর জানা হয়ে যাবে।