কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর, বিনা অনুমতিতে সরকারি কোয়ার্টার ও বিদ্যুৎ ব্যবহার, বেডিং সরঞ্জাম ঘাটতি, ভুয়া ভাউচারে সরকারি অর্থ লোপাট, ফল বিক্রেতার প্রক্সি ডিউটি ইত্যাদি অনিয়ম আর দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে নীলফামারী জেলার ডোমারের চিলাহাটি রেলওয়ে স্টেশন।
অভিযোগে জানা গেছে, চিলাহাটি রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার (এসএম গ্রেড-৪) আশরাফুল ইসলাম ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওই স্টেশনে যোগ দেন। চলতি বছরের ৫ এপ্রিল সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে একই কর্মস্থলে যোগ দেন আশরাফুলের স্ত্রী (এসএম গ্রেড-৪) নাজনিন পারভীন। স্ত্রী কর্মক্ষেত্রে না থাকলেও হাজিরা খাতায় উপস্থিত দেখানো হয়। একইভাবে ওই স্টেশনের পোর্টার সোহেল জুলাই মাসের ২০ থেকে ২৬ তারিখ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও স্টেশন মাস্টার নিজেই হাজির দেখিয়েছেন।
এছাড়া স্টেশন মাস্টারের প্রশ্রয়েই লেবার সর্দার তফিজ উদ্দিনের ছেলে নজু পার্শ্বেল বুকিং ও রেজিস্টারে লেখালেখি করেন। স্টেশন মাস্টারের সুনজর থাকার কারণে বেডিং পোর্টার রুজেল নিজের ডিউটি করান স্টেশনের লেবার দুলালকে দিয়ে। লেপ, বালিশ, কভার, কম্বলসহ মূল্যবান বেডিং সামগ্রী খোয়া যায়। অভিযোগ রয়েছে টিকিট কালোবাজারির।
অভিযোগে আরও জানা গেছে, স্টেশন সংলগ্ন দু’টি কোয়ার্টারকে কাগজ-কলমে পরিত্যক্ত দেখিয়ে একটি কোয়ার্টারে পরিবার নিয়ে দিব্যি বসবাস করছেন স্টেশন মাস্টার। বিদ্যুৎ বিলও দিতে হয় না।
স্টেশনের একটি সূত্র জানায়, ট্রেনকে সিগন্যাল দেখাতে বর্তমানে কেরোসিন তেলের ব্যবহার না থাকলেও প্রতিমাসে কেরোসিন তেল কেনা বাবদ হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ টাকা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে স্টেশন মাস্টার আশরাফুল ইসলাম সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন। তবে কোয়ার্টারে বসবাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। আর কেরোসিন তেল কেনার নামে ভাউচার দিয়ে প্রতিমাসে টাকা উত্তোলনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওই টাকা দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন করা হয়!