হোম > অপরাধ > রংপুর

ঝাড়ুদারের বেতনের সাড়ে ৩ লাখ টাকা মেরে দিলেন দুই কর্মকর্তা

আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া (রংপুর)

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসের ঝাড়ুদার মিনু মাইয়ের বকেয়া বেতনের সাড়ে ৩ লাখ টাকা সুকৌশলে আত্মসাৎ করেছেন দুই কর্মকর্তা। অভিযুক্ত ওই দুই কর্মকর্তা হলেন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান এবং সংস্থাপন ও প্রশাসন শাখার দেলওয়ার হোসেন। 

টাকা ফেরত ও শাস্তির দাবিতে রংপুর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল ফারুকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী মিনু মাই। 

মিনু মাই আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২০০৩ সালের ১৮ জুন তিনি হবিগঞ্জের যুব উন্নয়ন অফিসে ঝাড়ুদার পদে (উন্নয়ন খাতে) যোগদান করেন। ২০২২ সালের ২৯ অক্টোবর তাঁর চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত হয়। এর মাত্র এক মাস পর (২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর) তিনি বদলি হয়ে গঙ্গাচড়া উপজেলা অফিসে আসেন। উন্নয়ন খাত থেকে রাজস্ব খাতে চাকরি স্থানান্তরিত হওয়ায় তাঁর অনেক টাকা বকেয়া থাকে। ওই বকেয়া টাকা পেতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার মাধ্যমে বিল প্রস্তুত করে তা উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে দাখিল করতে হয়। ওই বিল প্রস্তুতের জন্য মিনু মাই গত ১৩ নভেম্বর উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে যান। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, তাঁর ওই বিলের ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৪৯৩ টাকা গত ৪ অক্টোবর উপজেলা যুব উন্নয়ন সংস্থাপন ও প্রশাসন শাখার দেলওয়ার হোসেন তুলে নিয়ে গেছেন। 

তখন তিনি নিজ অফিসে গিয়ে দেলওয়ার হোসেনের কাছে পাওনা বেতনের টাকা চাইলে তা প্রদান করা হয়েছে মর্মে তিনি জানান। ফলে তিনি তৎক্ষণাৎ যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমানকে অবহিত করেন। তিনিও একই কথা বলেন। এতে মিনু মাই নিজ অফিসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। কান্নার কারণ জানতে গিয়ে অফিসপাড়ার অনেকেই ঘটনাটি জানতে পারেন, যা মুহূর্তের মধ্যে পুরো অফিসপাড়ায় ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় মিনুকে বদলিসহ বিভিন্ন ভীতিকর হুমকি প্রদান করেন মাহমুদুর রহমান ও দেলওয়ার হোসেন। 

নিরুপায় হয়ে মিনু মাই পাওনা টাকা পেতে পরদিন (১৪ নভেম্বর) রংপুর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল ফারুক বরাবর লিখিত আবেদন দেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উপপরিচালকের নির্দেশে গত ১৬ নভেম্বর তাঁর দপ্তরে উপস্থিত হন অভিযোগকারী মিনু মাই এবং অভিযুক্ত মাহমুদুর রহমান ও দেলওয়ার হোসেন। এ সময় আগামী ২০ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ টাকা মিনু মাইকে ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করেন মাহমুদুর রহমান ও দেলওয়ার হোসেন। তবে এখনো টাকা পাননি মিনু। 

মিনু মাই বলেন, ‘আমার বকেয়া বেতন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে দেলওয়ার হোসেন স্যার আমার কাছে ৭০ হাজার টাকা চায়। এমনকি ৩৩ হাজার টাকা দিয়েও দিয়েছি। আর বাকি টাকা আমার বেতন হয়ে গেলে বেতনের টাকা তুলে দেব।’ 

কর্মচারী মিনু মাইয়ের বকেয়া বেতনের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিষয়টি অফিস সহকারী দেলওয়ার হোসেন জানেন। 

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মাহমুদুর রহমান বলেন, ডিডি স্যার বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছেন। একপর্যায়ে তিনি ঘটনাটি ভুল হয়েছে মর্মে স্বীকার করে জীবনে আর ভুল হবে না বলে আজকের পত্রিকার কাছে ক্ষমার দৃষ্টি কামনা করেন। 

একই বিষয়ে সংস্থাপন ও প্রশাসন শাখার দেলওয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্যারের (মাহমুদুর রহমান) নির্দেশে আমি নিয়ম অনুযায়ী টাকা উত্তোলন করেছি। মিনুকে ওই টাকা প্রদানের প্রাপ্তির স্বাক্ষরও আমার কাছে রয়েছে।’ মিনু মাইয়ের হাতে আপনি টাকা দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওটা স্যার ভালো জানেন।’ 

রংপুর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মিনু মাই আমার কাছ লিখিত অভিযোগের পর আমি তাঁদের আমার অফিসে ডেকেছিলাম। প্রথমে অস্বীকার করেন। পরে তিন দিন পর স্বীকার করেন। পরে টাকা ফেরত দিতে চান। আসলে বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।’ 

তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না, জানতে চাইলে আব্দুল ফারুক বলেন, ‘আমরা যদি অফিশিয়াল সিস্টেমে যাই, তাহলে মিনু মাইয়ের টাকা পেতে অনেক সময় লাগবে। তাই তাঁদের কিছু না বলে টাকা যাতে মিনু মাই পায়, সে ব্যবস্থা করছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মিনু মাইয়ের টাকাটা যেন তুলে দেওয়া যায়।’

পীরগঞ্জে তাল, খেজুরসহ বিভিন্ন গাছের মাথা কেটে দিলেন পল্লী বিদ্যুতের কর্মীরা

কোরআন-সুন্নাহবিরোধী আইন করতে দেব না, এটা আমাদের অঙ্গীকার: মির্জা ফখরুল

তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ গুদামে তালাবদ্ধ কম্বল

ভূরুঙ্গামারীতে বাস-মোটরসাইকেল সংঘর্ষ, যুবক নিহত

ফুলবাড়ীতে আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

পঞ্চগড়ে চার দিন ধরে ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীত

ফুলবাড়ীতে ট্রলির চাপায় সহযোগী নিহত

কাউনিয়ায় কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টা, যুবক গ্রেপ্তার

বিশেষ ট্রেনের দাবিতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের রেলপথ অবরোধ, ছেড়ে যায়নি লালমনি এক্সপ্রেস

কাউনিয়ায় মহাসড়কে ঝরল দুই কৃষকের প্রাণ