ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে ডাকাতির মামলায় আবদুর রাজ্জাক (৪৩) নামের এক পৌর কাউন্সিলরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে হরিপুর থানা-পুলিশ রানীশংকৈল উপজেলার ভান্ডারা গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃত আব্দুর রাজ্জাক রানীশংকৈল পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ভান্ডারা গ্রামের বাসিন্দা। জনপ্রতিনিধির আড়ালে মূলত তিনি ছিলেন আন্তজেলা মোটরসাইকেল চোর চক্রের সদস্য।
গত ১৯ মার্চ গভীর রাতে হরিপুর উপজেলার আমগাঁও ইউনিয়নের নন্দগাঁও গ্রামে জাহিদুল ইসলাম নামের এক সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ীর বাড়িতে কয়েকজন ডাকাত পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতি করে। এ সময় ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে ৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকাসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায় ডাকাতেরা। এ সময় জাহিদুল ও তাঁর পরিবারের লোকজন বাইরে বেরিয়ে গিয়ে ‘ডাকাত’ ‘ডাকাত’ বলে চিৎকার দেন। এতে এলাকার লোকজন ছুটে আসে। পরে ডাকাতেরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। লোকজন তাদের ধাওয়া দেয়। ডাকাত দলের সদস্যরা পাশের ভুট্টাখেত দিয়ে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পরের দিন পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে, এ সময় সেখান থেকে একটি মুঠোফোন ও সিম উদ্ধার করা হয়। পরে মুঠোফোন নম্বরের সূত্র ধরেই প্রযুক্তির সাহায্যে পুলিশ ডাকাতির ঘটনায় জড়িত তিন ব্যক্তিকে শনাক্ত করে। ওই তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর তাঁদের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে পুলিশ আব্দুর রাজ্জাককে নজরদারির মধ্যে রাখে। পরে ঘটনায় আব্দুর রাজ্জাকের জড়িত থাকার বিষয়টি পুলিশ নিশ্চিত হলে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর নিজ বাড়ি ভান্ডারা গ্রাম থেকে আটকের পর ডাকাতির মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার দেখায়।
হরিপুর থানার ওসি এস এম আওরঙ্গজেব বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুর রাজ্জাক ডাকাতির ঘটনায় জড়িত আছেন বলে স্বীকার করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে মোটরসাইকেল চুরি ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কাগজে জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকটি থানায় ৩৪টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় কারাগারে থাকার পরে জামিনে বের হয়ে আবারও অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ওসি আরও বলেন,গ্রেপ্তারের পর ওই কাউন্সিলরকে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আদালতে তোলা হয়েছে। পরে আদালত আব্দুর রাজ্জাককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তাঁর সঙ্গে আরও কারা জড়িত, সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়ার বিষয়ে আজ বুধবার তাঁকে আবারও আদালতে তোলা হবে।