মশক নিধনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) জৈব কীটনাশক ‘বিটিআই’ প্রয়োগ শুরু করেছে। এই কীটনাশক পরিবেশের কোনো ধরনের ক্ষতি না করে ডেঙ্গু জ্বরের জন্য দায়ী এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস করবে বলে বলা হচ্ছে।
এখন এই জৈব কীটনাশক নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। মার্শাল অ্যাগ্রোভেট কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি কীটনাশকটি সরবরাহ করেছে। তারা দাবি করেছে, সিঙ্গাপুরের কোম্পানি ‘বেস্ট কেমিক্যালস’ এই কীটনাশকের উৎপাদক।
তবে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন দেখে বেস্ট কেমিক্যালস তাদের ফেসবুক পেজে জানিয়েছে, তারা এটি সরবরাহ করেনি। এমনকি তাদের নাম ব্যবহার করে যারা ‘বিটিআই’ সরবরাহ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে তারা।
বেস্ট কেমিক্যালস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক সতর্কবার্তায় জানায়, বাংলাদেশি কোম্পানি মার্শাল অ্যাগ্রোভেট কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মাধ্যমে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনকে ৫ টন বিটিআই পাঠানোর খবরটি তাদের নজরে এসেছে। সেখানে ‘প্রতারণামূলকভাবে’ তাদের নামটি ব্যবহার করা হয়েছে। তারা এই বিটিআই সরবরাহ করেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিটিআই আমদানির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মার্শাল অ্যাগ্রোভেট কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) সদস্য। প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় পুরানা পল্টনের বায়তুল আবেদ ভবনের ৯ম তলায়। তবে প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে দেওয়া ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘যারা এ কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ মেয়র বলেন, ‘যে কোনো ধরনের পেস্টিসাইডস (কীটনাশক) আমরা আনি আর যদি তা ঠিক না হয় তাহলে যারা দিয়েছে আমরা অবশ্যই ধরব। আর আমদানিকারকেরা কোনো কিছু (প্রতারণা) করলে আমাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগ আছে তারা বিষয়টি দেখবে।’
জৈব কীটনাশকটির পুরো নাম ব্যাসিলাস থুরিংয়েইনসিস ইসরায়েলেনসিস। গত ৭ আগস্ট ঢাকার গুলশানে এর প্রয়োগের কাজ উদ্বোধন করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। তখন ডিএনসিসি থেকে জানানো হয়, সিঙ্গাপুরের বেস্ট কেমিক্যালস কোম্পানি থেকে ৫ টন বিটিআই আনা হয়েছে। প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৩ হাজার ৩৮৫ টাকা করে। সে হিসাবে পাঁচ টনের দাম পড়েছে ১ কোটি ৬৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
ওই অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির মেয়র বলেছিলেন, ‘সিঙ্গাপুর থেকে মশার লার্ভা ধ্বংসকারী জৈব কীটনাশক বিটিআই আনতে পেরেছি। ডিএনসিসির স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সিঙ্গাপুরের একটি বিশেষজ্ঞ টিমের কনফারেন্স হবে। আমাদের কর্মকর্তারা বিশেষজ্ঞ টিমের কাছ থেকে জানবে বিটিআই কীটনাশকটি কীভাবে মিক্সিং হবে, কীভাবে ও কোথায় ব্যবহার হবে। তারপর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় কীটনাশক বিটিআই প্রয়োগ করা হবে।’