গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থানার সিকদারপাড়া এলাকার শুকুর শিকদারের বাড়ি থেকে এক দম্পতির আগুনে পোড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ৬টার দিকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে জিএমপির কোনাবাড়ী থানা-পুলিশ।
নিহতরা হলেন, নীলফামারীর ডিমলা থানার ভাঙ্গারহাট গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে আবু সুফিয়ান (৩৮) ও তাঁর স্ত্রী নাসরিন আক্তার (৩০)।
জানা গেছে, ওই দম্পতি মহানগরীর কোনাবাড়ী থানার সিকদারপাড়া এলাকার শুকুর শিকদারের মালিকানাধীন ছয়তলা ভবনের নিচতলায় ভাড়া থাকতেন। আবু সুফিয়ান দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করতেন। নাসরিন স্থানীয় একটি কারখানায় অপারেটর পদে কর্মরত ছিলেন। তাঁদের বড় ছেলে নাফিস (১২) স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় থেকে পড়াশোনা করে এবং দু’বছর বয়সী ছোট ছেলে নীলফামারীতে নানির কাছে থাকে। ঘটনার সময় ওই দম্পতি ছাড়া কেউ ঘরে ছিল না।
খবর পেয়ে আজ সকালে মাদ্রাসা থেকে মা-বাবাকে দেখতে ছুটে আসে নাফিস। ঘরের ভেতর বাবা-মার নিথর দেহ দেখে কাঁদতে কাঁদতে বলে, ‘আমার মা কারখানায় ও বাবা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করত। তাঁরা দুজনেই আমার সকল আবদার পূরণ করার চেষ্টা করতেন। আমি গতকাল শুক্রবার মা-বাবার সঙ্গে সময় কাটিয়ে রাতে মাদ্রাসায় চলে গিয়েছিলাম।’
শিকদারের বাড়ির নিরাপত্তা প্রহরী আল আমিন বলেন, ‘আজ শনিবার ভোর ৫টার দিকে নিহতদের ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে অন্যদের সহায়তায় ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে পানি দিয়ে আগুন নেভাই এবং বিছানায় স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ দেখতে পাই। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।’
মৃত নাসরিনের বড় ভাই নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বোন ও বোনজামাইয়ের মধ্যে পারিবারিক কিছু বিরোধ ছিল। তবে, এমন ঘটনা ঘটানোর মতো বিরোধ ছিল না।’
ওসি আরও বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি রহস্যজনক। তারা আগুনে পুড়ে মারা গেছেন, না মৃত্যুর পর আগুন লেগেছে, এ ঘটনায় কোনো নাশকতা রয়েছে কি না, তা আমরা খতিয়ে দেখছি। তদন্ত শেষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে জিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ-দক্ষিণ) আবু তোরাব মো. ছামসুর রহমান বলেন, ঘরের ভেতরে খাটের ওপর ছিল নারীর মরদেহ। তাঁর শরীরের নিচের অংশ আগুনে পুড়ে গেছে। গলায় হালকা দাগ রয়েছে। আর ঘরের মেঝেতে ছিল স্বামীর মরদেহ।