হোম > অপরাধ > ঢাকা

কুকি-চিন প্রধানের আত্মসমর্পণের পরামর্শ, সশস্ত্র প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নেন শামিন: সিটিটিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের আলোচিত নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানের পর আত্মসমর্পণের পরামর্শ দেন সংগঠনটির পাহাড়ে আশ্রয়দাতা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের প্রধান নাথান বম। কিন্তু নতুন এই জঙ্গি সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা শামিন মাহফুজ আত্মসমর্পণের পরামর্শ গ্রহণ করেননি। বরং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

শামিন মাহফুজ ওরফে স্যার ওরফে আরিফ ওরফে আসলাম ওরফে মেন্ডিং ও তাঁর স্ত্রী নাজনীনকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।

গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর ডেমরা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে একটি পিস্তল ও বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক জব্দ করা হয়েছে।

আজ শনিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও মূল ব্যক্তি শামিন মাহফুজকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হয়েছে। এর মাধ্যমে একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সিটিটিসির প্রধান।

তিনি বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই শামিন মাহফুজ অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। এসএসসিতে রাজশাহী বোর্ডে পঞ্চম স্থান অর্জন করেন, এরপর রংপুর ক্যাডেট কলেজে পড়াকালে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে এলে তাঁকে ক্যাডেট কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর অন্য একটি কলেজে ভর্তি হলেও তিনি মেধার স্বাক্ষর রাখেন। এইচএসসিতে রাজশাহী বোর্ডে সপ্তম স্থান অর্জন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসির প্রধান বলেন, ‘ঢাবিতে ভর্তি হওয়ার পরই বড় ভাইয়ের ছেলের মাধ্যমে জঙ্গি সংগঠনে জড়িয়ে যান শামিন। যে সংগঠনটি পরে আনসার আল ইসলাম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ২০০৭ সাল থেকেই শামিন মাহফুজ সংগঠনের আধ্যাত্মিক নেতা জসীম উদ্দিন রহমানীসহ শীর্ষ নেতৃত্বের সংস্পর্শে আসেন। সে সময় আরেকটা বিদেশি চরিত্র বাংলাদেশের জঙ্গিবাদে আবির্ভূত হয় বলে জানা গিয়েছিল। কিন্তু সে চরিত্রের বিষয়ে আমরা স্পষ্ট নই, সেই চরিত্রের বিষয়ে আমরা শামিন মাহফুজের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করব।’

মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ঢাবিতে পড়াকালীন শামিন মাহফুজ পাহাড়ে ক্যাম্পের পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী তিনি পাহাড়ে যান। ঢাবি থেকে বের হয়ে তিনি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। এর মধ্যেই তাঁর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডিতে এনরোলমেন্ট হয়। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল পাহাড়ে ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর। ইচ্ছা করেই তিনি এই বিষয়টি নেন, যাতে তিনি পাহাড়ে যেতে পারেন এবং সেখানে নিরাপদ আস্তানা তৈরি করতে পারেন।

সিটিটিসির প্রধান বলেন, ঢাবিতে থাকাকালে শামিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন কুকি-চিনের প্রধান নাথান বম। শামিন উদ্দেশ্যমূলকভাবেই নাথান বমের সঙ্গে পরিকল্পনা করে ঘনিষ্ঠতা করেন। তখনই নাথান বমের সঙ্গে পাহাড়ে বেড়াতে যান শামিন। ২০১৯ সালে নাথান বমকে জঙ্গি সংগঠন তৈরির কথাটি জানান শামিন এবং সশস্ত্র জিহাদের প্রস্তুতের জন্য তাঁকে ট্রেনিং ক্যাম্প স্থাপনের প্রস্তাব দেন।

তিনি আরও বলেন, ‘২০২০ সালে কক্সবাজারের একটি হোটেলে বসে কুকি-চিন ও নতুন জঙ্গি সংগঠন শারক্বীয়ার মধ্যে সমঝোতা স্মারক হয়। আমরা শামিনের কাছ থেকে হাতে লেখা দুই পৃষ্ঠার স্মারকটি উদ্ধার করতে পেরেছি। সেখানে কুকি-চিন কর্তৃক জঙ্গি সংগঠনটিকে সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ ছিল। তখন থেকেই কুকি-চিনের আওতায় তাদের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘২০২১ সালে সিলেট থেকে ছয় তরুণ নিখোঁজ হয়। এপ্রিলে প্রথম ১২ জন নিয়ে পাহাড়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়। কুকি-চিনের ক্যাম্পের পাশেই কেডিসি ক্যাস্প নামে ক্যাম্পটি পরিচালিত হয়। তখনই প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে বসে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে সংগঠনটি। ২০২২ সালের শুরুর দিকে ৩০ জনের বেশি তরুণ নিখোঁজ হন। তখনই আমরা এ সংগঠনের তৎপরতার বিষয়ে অবগত হই। শামিন মাহফুজের স্ত্রী, যাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে; তিনি ছিলেন আনসার আল ইসলামের ইজাজ কারগিলের স্ত্রী। যিনি কারগিল যুদ্ধে ড্রোন হামলায় মারা যান। ইজাজ যখন পাকিস্তান চলে যান তখন সংগঠনের সিদ্ধান্তে তাঁর স্ত্রীকে বিয়ে করেন শামিন। তাঁর স্ত্রীও সংগঠনের নারী সদস্য হিসেবে নারীদের দাওয়াতি কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা নাথান বমের সঙ্গে শামিনের সর্বশেষ যোগাযোগটা উদ্‌ঘাটন করতে পারিনি। আমরা মনে করি কোনো না কোনোভাবে তাঁর যোগাযোগ থাকতে পারে। হিজরতে যাওয়া অধিকাংশকেই আমরা গ্রেপ্তার করতে পেরেছি। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত জানা যাবে।’

ডেইলি স্টারে লুটপাট-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৩৫০-৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা

ঢামেকে তরুণীর লাশ ফেলে পালালেন ‘স্বামী’

স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করায় স্ত্রীর কারাদণ্ড

বড়দিন উপলক্ষ ২১টি গির্জায় আর্থিক প্রণোদনা দিল ডিএনসিসি

৩০ কার্যদিবসের মধ্যে হাদি হত্যার বিচার শেষ করার দাবি

জাবিতে ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে এসে আটক ঢাবি শিক্ষার্থীর কারাদণ্ড

রাজনীতিতে পরস্পরের বিরুদ্ধে গালাগালিতে শত্রুরা উপকৃত হয়: ড. মাহবুব উল্লাহ

প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় ১৫ জন কারাগারে

জাবিতে ভর্তি পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন, আটক ১

শিক্ষার্থী হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাবেক এমপি বাদলকে