অস্ত্র আইনে করা মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক সেই আবদুল মালেক ওরফে বাদলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এ দুজন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।
র্যাব-১ এর পুলিশ পরিদর্শক আলমগীর হোসেনসহ দুজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি এই মামলার বাদী। আবদুল মালেকের কাছ থেকে অস্ত্র ও জাল টাকা উদ্ধারের ঘটনা তিনি বর্ণনা করেন আদালতে। পরে আরেকজন সাক্ষীও সাক্ষ্য দেন। বুধবার দুজনকে জেরা করবেন আসামি পক্ষের আইনজীবী। এদিন আসামি মালেককে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তার উপস্থিতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
গত ১১ জানুয়ারি অস্ত্র আইনের মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১ এর উপপরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান চৌধুরী ১৩ জনকে সাক্ষী করে আসামি মালেকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর গত ১৪ ফেব্রুয়ারি মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন আদালত। পরে গত ৪ এপ্রিল আসামি মালেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ভোরে রাজধানীর তুরাগ এলাকা থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক আবদুল মালেক ওরফে ড্রাইভার মালেককে আটক করে র্যাব-১ এর একটি দল। এ সময় তাঁর কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ বাংলাদেশি জাল নোট, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ পরিদর্শক আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে তুরাগ থানায় অস্ত্র আইন ও জাল টাকার জন্য বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন।
রাজধানীর তুরাগে সাত তলার দুটি বিলাসবহুল বাড়িতে ২৪টি ফ্ল্যাট, একইস্থানে অন্তত ১২ কাঠার আরেকটি প্লট ছাড়াও হাতিরপুলে নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবনের মালিক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক আবদুল মালেক। একজন গাড়িচালক হলেও ব্যক্তিগত গাড়ি হিসেবে ব্যবহার করতেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের জন্য বরাদ্দকৃত পাজেরো গাড়ি।
গাড়িচালক আবদুল মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রশাসনকে জিম্মি করে হস্তক্ষেপ করতেন ডাক্তারদের বদলি-পদোন্নতিতেও। নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে তদবিরের নামে আদায় করে নিয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। যার বদৌলতে অল্প দিনেই শত কোটি টাকারও বেশি অর্থ-সম্পদের মালিক বনে গেছেন এই মালেক ড্রাইভার। শুধু তাই নয়, অধিদপ্তরের বিভিন্ন পদে চাকরি দিয়েছেন নিজের আত্মীয়-স্বজনকে। এমন সব খবর র্যাবের হাতে আসার পর নজরদারিতে রাখা হয় মালেকের গতিবিধি। পরে ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।