কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মোবাইল কেনাকে কেন্দ্র করে আবদুর রউফ নয়ন (৩৮) নামের এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে উপজেলার জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের নোয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি বুধবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা।
নিহত নয়ন নোয়াগ্রামের আবদুল গফুরের ছেলে। তাঁর তিন ছেলে ও ৯ মাসের এক মেয়ে রয়েছে। পেশায় তিনি ছিলেন রাজমিস্ত্রির সহকারী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পাশের ফুলগ্রাম থেকে এক যুবক মোবাইল বিক্রি করার জন্য নয়নের বাড়িতে আসেন। মোবাইল বিক্রির সময় কালাম নামের এক যুবক বাধা দেন। এ নিয়ে কালাম ও নয়নের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এরই জেরে বাড়িতে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়।
এরপর আজ বুধবার সকালে আবদুর রউফ নয়ন বাড়ির পশ্চিম পাশের পুকুর পাড়ে গেলে একই বাড়ির আবুল কাসেমের ছেলে আবুল কালাম মোবাইল কেনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভে হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে নয়নের বুকের বাম পাশে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে নয়নের চিৎকারে বাড়িতে থাকা তাঁর বোন আসমা আক্তার এসে তাঁকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সোলেমান বাদশা নয়নকে মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসক সোলেমান বাদশা বলেন, ‘নিহত আবদুর রউফ নয়নের বুকের বামপাশে ছুরির আঘাতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। সে কারণেই তাঁর মৃত হয়েছে। আমরা তাঁকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি।’
আবদুর রউফ নয়নের মা সবুরা বেগম তিন নাতিকে কোলে নিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার চার নাতির কী হবে? কে করবে তাদের ভরণপোষণ। আমার ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজ করে দিন এনে দিন খায়। আমার ছেলে কোনো শক্র নেই।’
নিহত নয়নের মামতো বোন আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমি খবর শুনে বাড়িতে আসি। নয়নকে যে ছুরি মেরে হত্যা করেছে আমি তাঁর ফাঁসি চাই।’
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা খবর শুনে লাশ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ছাড়া অভিযুক্তকে আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’