চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর সুদীপ্ত হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি ষষ্ঠবারের মতো পিছিয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম-২ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আমিরুল ইসলামের আদালত নতুন করে আগামী ৩ অক্টোবর মামলাটির অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন।
মহানগর দায়রা আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই মামলায় অভিযোগ গঠনের জন্য আগেও বেশ কয়েকবার সময় দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে চার্জ গঠনের আবেদন করে। কিন্তু এদিন আসামি দিদারুল আলম মাসুমসহ সাত আসামির মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে পূর্বের আবেদনের ওপর শুনানি হয়। বাকি আসামিরা অব্যাহতি আবেদনের শুনানির জন্য সময় প্রার্থনা করেন। পরে আদালত আগামী ৩ অক্টোবর পুনরায় মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
একই দিন আদালত সব আসামির অব্যাহতি আবেদনের ওপর শুনানি করবেন। এদিন রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ, অ্যাডভোকেট সাব্বির আহমেদ শাকিল, অ্যাডভোকেট সাহাব উদ্দিন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে ৬ অক্টোবর সদরঘাট থানাধীন দক্ষিণ নালাপাড়ার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয় সিটি কলেজের শিক্ষার্থী নগর ছাত্রলীগের নেতা সুদীপ্ত বিশ্বাসকে। এ ঘটনায় সুদীপ্তের বাবা বাদী হয়ে সদরঘাট থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এই খুনে লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমসহ ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)।
এই মামলায় গত ১৯ জানুয়ারি, ২২ মার্চ, ২৬ এপ্রিল, ২০ জুন ও ১৮ জুলাই অভিযোগ গঠনে শুনানির তারিখ থাকলেও তা পেছানো হয়। মামলাসংশ্লিষ্ট একজন আইনজীবী বলেন, এই মামলার আসামিরা সময়, মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করে সময়ক্ষেপণ করে যাচ্ছেন।
ছাত্রলীগ নিহত নেতা সুদীপ্তর বাবা মেঘনাথ বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেভাবে চলছে, তাতে জীবিত অবস্থায় ছেলের বিচার দেখতে পারব কি না, সন্দেহ রয়েছে। মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেওয়ার জন্য আবেদন করার পরও কোনো সাড়া পাচ্ছি না।’ সুদীপ্ত খুনের আসামিপক্ষরা প্রভাবশালী হওয়ায় বিভিন্নভাবে মামলাকে প্রভাবিত করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পিবিআই অভিযোগপত্রে বলা হয়, সুদীপ্ত হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা মো. দিদারুল আলম মাসুম। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া সব আসামি মাসুমের অনুসারী। মূলত ফেসবুকে লেখালেখির কারণে সুদীপ্ত বিশ্বাস লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমের বিরাগভাজন হয়েছিলেন। মাসুমের সহযোগী আইনুল কাদের নিপুকে হামলায় ‘নেতৃত্বদানকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
আদালত সূত্র বলেছে, বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার হলেও বর্তমানে এই মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুমসহ ২৩ জন জামিনে রয়েছেন। মো. মামুন নামে এক আসামি কারাগারে রয়েছেন।