চট্টগ্রামের রাউজানে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন উপেক্ষা করে শতবর্ষী পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শেখপাড়া গ্রামের এই পুকুর ভরাটের অভিযোগ উঠেছে মো. এরশাদ নামের এক প্রবাসীর বিরুদ্ধে।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে (২০১০) বলা হয়েছে, জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গা ভরাট বা অন্য কোনোভাবে শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। এই আইন লঙ্ঘনকারীদের দুই বছর কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা গেছে, শতাধিক বছরের একটি পুকুর ভরাট করছেন স্থানীয় প্রয়াত রফিকুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে রউফের মধ্যপ্রাচ্যপ্রবাসী ছেলে মো. এরশাদ। পুকুর ভরাটের দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মো. আরবান।
স্থানীয় বাসিন্দা ৮৭ বছর বয়সী আবদুল গণি বলেন, ‘বাপ-দাদার মুখে শুনেছিলাম ৩০০ বছর আগে পুকুরটি খনন করেছিলেন ওয়াহেদ মিয়া ফকির নামের এক ব্যক্তি। এখন পুকুরটির মালিক স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি। পুকুরটির চারপাশের ঘাটে অনেক পরিবারের লোকজন গোসল করে। এ ছাড়া তারা গৃহস্থালির কাজে পুকুরের পানি ব্যবহার করে আসছিল। পুকুরটির একাংশ ভরাট করায় আমরা হতাশ হয়েছি।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, পাহাড়তলী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ৪ নম্বর সড়ক সম্প্রতি সংস্কার করা হয়েছে। এর উদ্বোধনের আগেই পুকুর ভরাটের কাজে অতিরিক্ত মাটিবোঝাই ট্রাক চলাচল করায় সড়কের ক্ষতি হচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে মো. এরশাদ বলেন, ‘আমি পুকুর ভরাট করছি না, পুকুরের পাড় ভেঙে যাওয়ায় তা মেরামত করেছি। আমি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) থেকে অনুমতি নিয়েই পুকুরের পাড় ভরাট করছি।’ এ বিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মো. আরবানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
পাহাড়তলী ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই তিনি পুকুর ভরাট করছেন। পুকুর থেকে মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ায় আমরা অনুমতি দিয়েছি। সড়ক ক্ষতির বিষয়ে আমাকে কেউ অভিযোগ করেননি।’
এ বিষয়ে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা বলেন, ‘পাহাড়তলী ইউনিয়নে পুকুর ভরাটের বিষয়ে আমাকে কেউ জানাননি। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অমান্য করে পুকুর ভরাট করা অন্যায়। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’