চট্টগ্রাম থেকে মানুষের কিডনি ও লিভার পাচারকারী একটি আন্তর্জাতিক চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
আজ শুক্রবার র্যাব-৭ পতেঙ্গা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে আটকের বিষয়টি জানানো হয়।
আটককৃতরা হলেন, মুন্সিগঞ্জ জেলার বাসুদিয়া গ্রামের মো. মতিউর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ আলী ডালিম (৩৫), কিশোরগঞ্জ সদরের আখড়া বাজার এলাকার মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে আতিকুর রহমান রনি (৩৬) ও মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার সম্বুক এলাকার মৃত মুজিবুর রহমানের ছেলে মো. আলম হোসেন (৩৮)।
র্যাব-৭ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমএ ইউসুফ বলেন, আটকদের মধ্যে রনি আন্তর্জাতিক কিডনি ও লিভার পাচারকারী দলের সদস্য। বাংলাদেশে এই সিন্ডিকেটের মূল হোতা ডালিম। ভারতে অবস্থান করা পাচারকারী চক্রের শাহিন নামে এক ব্যক্তি বাংলাদেশে রনি, আমলসহ অন্যদের মাধ্যমে কিডনি ও লিভারের ডোনার সংগ্রহ করে থাকেন। ডোনার সংগ্রহ করে তাঁদের ভারতে পাচারের ব্যবস্থা করেন চক্রটির লোকজন।
এ র্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, চক্রটি আর্থিক সমস্যায় পড়া লোকজনদের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে কিডনি ও লিভার সংগ্রহ করতেন। বিশেষ করে করোনা মহামারির কারণে এত দিন যারা প্রবাসে ছিলেন তাঁদের অনেকেই বর্তমানে দেশে ফিরে এসেছেন। এর আগে প্রবাসীদের অনেকেই বিদেশে যাওয়ার আগে বিভিন্ন জনের কাছে ধারদেনা করে গেছেন। দেশে ফিরে আর্থিক সমস্যায় পড়া এ ধরনের লোকদেরই মূলত তারা টার্গেট করেন। পাশাপাশি দরিদ্র লোকদেরও টার্গেট করেন তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৭ জনসংযোগ কর্মকর্তা নিয়াজ মোহাম্মদ চপল বলেন, ‘কিডনির ডোনারদের মোটা অঙ্কের অর্থের লোভ দেখিয়ে ভারতে পাঠানো হয়। এ জন্য তাঁদের পাসপোর্ট তৈরি করে দেওয়াসহ সব ব্যবস্থা করে চক্রটির লোকজন।
এ কর্মকর্তা জানান, প্রতি কিডনি ডোনারের সঙ্গে ৪ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকায় মৌখিক চুক্তি হতো। আর চক্রটি কিডনি বিক্রির জন্য ভারতীয় এজেন্টদের কাছ থেকে নিত ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। সম্প্রতি সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে সাড়ে ৪ লাখ টাকায় কিডনি ডোনেট করার প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচারের চেষ্টা করা হয়েছিল।
র্যাবের পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, চক্রটি কিডনি বিক্রির জন্য এ পর্যন্ত ৪০ জনকে ভারতে পাঠিয়েছে। র্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, কিডনি নিয়ে চক্রটির বেশ কয়েকটি ফেসবুক গ্রুপ সক্রিয়।
চক্রটির সদস্যদের আটকের পর খুলশী থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।