শেরপুরের নকলায় ব্রহ্মপুত্র নদের ক্ষতিগ্রস্ত পাড়ের কাছ থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বাঁধ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এতে নতুন করে নদের পাড় ভাঙনের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ভাঙন রোধে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এ কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সামছুজ্জামান এন্টারপ্রাইজ। ১৮০ মিটার দীর্ঘ বাঁধ নির্মাণে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৩ লাখ ২৩ হাজার ২০৫ টাকা।
নারায়ণখোলা গ্রামের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য রুকুনুজ্জামান খান টুটুল বলেন, ‘ঠিকাদারের লোকজন নদের ক্ষতিগ্রস্ত পাড়ের কাছ থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে তা জিও ব্যাগে ভরে বাঁধের কাজ করছেন। এভাবে কাজ করলে আবারও হুমকির মুখে পড়বে বাঁধ। গচ্চা যাবে বাঁধ নির্মাণের টাকা। আমরা এ নিয়ে প্রতিবাদ করেছি।’
স্থানীয়রা জানান, নদের উত্তর পাড়ে ভাঙনে ইতিমধ্যে নারায়ণখোলা দক্ষিণ গ্রামের প্রায় ১ হাজার ৫০০ একর আবাদি জমির পাশাপাশি বিলীন হয়েছে হাজার হাজার গাছপালা, ৫ শতাধিক ঘরবাড়িসহ দুটি মসজিদ, খেলার মাঠ ও কবরস্থান। বাস্তুচ্যুত হয়েছে কয়েক শ পরিবার। ভাঙনের কবলে থাকা নারায়ণখোলা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন একতলা পাকা ভবনটি দুই বছর আগে নিলামে বিক্রি করে দেওয়ায় বর্তমানে বিদ্যালয়ের শ্রেণিপাঠ চলছে একটি পরিত্যক্ত আধা পাকা ঘরে। সেটিও নদের গর্ভে বিলীনের পথে। চরঅষ্টধর ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানী বলেন, ‘নদের পাড়ের কাছ থেকে ড্রেজারে বালু তোলার বিষয়টি এলাকাবাসী আমাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আনা হয়েছে। কোনো অবস্থাতেই নদ থেকে বালু তোলা যাবে না।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক সামছুজ্জমান মিলন বলেন, ওয়ার্ক অর্ডার ছাড়াই কাজ শুরু করেছি। তবে ড্রেজার দিয়ে নদ থেকে বালু তোলার বিষয়ে বলা হলে তিনি জানান, পাউবোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
পাউবোর শেরপুর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শাহজাহান জানান, ঠিকাদারকে ড্রেজার বসিয়ে নদ থেকে বালু তোলা ও ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদ বলেন, খবর পেয়ে ড্রেজার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এলাকায় খোঁজ রাখা হচ্ছে। পুনরায় এমন ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।