নওগাঁর মান্দায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সম্পত্তিতে অবৈধভাবে একের পর এক পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন দখলদারেরা। আত্রাই নদীর উভয় তীরের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের সম্পত্তি দখল করে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হলেও নীরব রয়েছেন পাউবোর কর্তারা। এতে ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয়দের মধ্যে।
স্থানীয়দের দাবি, স্থাপনা নির্মাণের সময় অভিযোগ দেওয়া হলে শুধুমাত্র নোটিশ দিয়েই দায় এড়িয়ে যান সংশ্লিষ্টরা। দখলদারেরা সেই নোটিশ অমান্য করে নির্মাণকাজ চালিয়ে গেলেও তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। পাউবোর লোকজনের ম্যানেজ করে এরই মধ্যে গড়ে তোলা হয়েছে কয়েক শ স্থাপনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, তালপাতিলা মোড়ে পাউবোর সম্পত্তি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করছেন শাহিনুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। এ মোড়ে থেকে এক কিলোমিটার দূরে উত্তর চকরামপুর ঘোষপাড়া মোড়ে দোকান ঘর নির্মাণ করছেন ফিরোজ হোসেন নামের অপর একজন।
এ দুটি স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের জন্য গত বুধবার নোটিশ জারি করেছে পাউবো কর্তৃপক্ষ। সেই নোটিশ অমান্য করে গত শুক্রবার শাহিনুর রহমান নির্মিত ভবনে ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন করেন। অন্যদিকে নির্মাণকাজ অব্যাহত রেখেছেন আরেক দখলদার ফিরোজ হাজী।
দখলদার ফিরোজ হাজী পাউবোর সম্পত্তিতে দোকানঘর নির্মাণের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘আমার এলাকার আশপাশে অনেক স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। তাঁরা ওই সব স্থাপনায় বহাল তবিয়তে ব্যবসা করছেন। আমিও ব্যবসা করার জন্য দোকানঘর নির্মাণ করছি।’
নির্মাণকাজ বন্ধের জন্য পাউবোর নোটিশ পেয়েছেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গত বুধবার একটি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এরপরও নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছি। পরে যা হয় হবে।’
অন্যদিকে দখলদার শাহিনুর রহমান বলেন, ‘আমার নির্মিত ঘরে কশব ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিস হবে। তাই নোটিশের তোয়াক্কা না করে কাজ করছি।’
কশব ইউনিয়নের একজন গ্রামপুলিশ বলেন, অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে পাউবো কর্তৃপক্ষকে দফায় দফায় জানিয়েও কোনো কাজ হয় না। তাঁরা নাম মাত্র নোটিশ করেই থেমে যান। এর পেছনে অবৈধ লেনদেনের বিষয় থাকতে পারে।’
পাউবোর নওগাঁর উপসহকারী প্রকৌশলী মাহবুব হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে নোটিশ করা হয়েছে। নোটিশের নির্দেশনা না মানলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তবে অবৈধ লেনদেনের অভিযোগটি অস্বীকার করেন পাউবোর এই কর্মকর্তা।