দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে কাঁচি দিয়ে খুঁচিয়ে অটোরিকশার এক চালককে হত্যা করেছেন দুর্বৃত্তরা। গতকাল রোববার সকালে উপজেলার গোয়ালপাড়া-মাছুয়াপাড়ার মাঝামাঝি এলাকায় ইউক্যালিপটাস বাগানে লাশটি পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে পাশের পার্বতীপুর উপজেলা থেকে তাঁর রিকশা উদ্ধার করা হয়েছে।
চালকের নাম মো. জনি আহম্মেদ (২১)। তিনি ফুলবাড়ীর শিবনগর ইউনিয়নের রাজারামপুর দক্ষিণ বাসুদেপুর (ডাঙ্গা) গ্রামের মো. আতাউর রহমানের ছেলে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, জনি প্রতিদিনের মতো গত শনিবার দুপুরে খাবার খাওয়া শেষে অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর গভীর রাতেও আর না ফিরলে তাঁর স্ত্রী কাজলরেখা বিষয়টি তাঁর বাবা গিয়াস মণ্ডলকে জানান। পরদিন রোববার সকালে কাজলরেখার মা রাবেয়া বেগম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জনির লাশের ছবি দেখেন এবং ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিচয় শনাক্ত করেন।
এর আগে শনিবার গভীর রাতে পার্বতীপুর উপজেলার হলদিবাড়ী এলাকায় কিছু লোক আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় পুলিশের টহল দলের সদস্যদের দেখে তাঁরা একটি অটোরিকশা রেখে পালিয়ে যান। পুলিশ পরে অটোরিকশাটি নিজেদের হেফাজতে নেয় এবং গায়ে লেখা মোবাইল ফোন নম্বরে যোগাযোগ করে জানতে পারে, এটি জনির ছিল।
জনির শাশুড়ি রাবেয়া বলেন, কাজলরেখার কাছ থেকে জনির নিখোঁজের বিষয়টি শুনে তাঁরা খোঁজাখুঁজি করে জানতে পারেন, মেয়ের জামাইয়ের অটোরিকশাটি পার্বতীপুর থানায় আছে, কিন্তু জামাই জনি নেই।
শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. নূরুল ইসলাম বলেন, ‘জনি দক্ষিণ বাসুদেবপুর (ডাঙ্গা) গ্রামের বাসিন্দা। সে অটোরিকশা চালাত। ওই রিকশাকে কেন্দ্র করেই এই হত্যাকাণ্ড হতে পারে।’
গতকাল সকালে লাশ পাওয়ার খবর পেয়ে ফুলবাড়ী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান, ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশ্রাফুল ইসলামসহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
ওসি আশ্রাফুল জানান, ঘটনাস্থল থেকে কিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। লাশের সুরতহাল কারার সময় জনির গলায় ছোট কাঁচি দিয়ে খুঁচিয়ে ফুটো করার অনেকগুলো ফুটো দেখা যায়। ঘটনাস্থলে একটি ছোট কাঁচি পাওয়া গেছে, যাতে রক্ত লেগে ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে জনির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
ওসি আশ্রাফুল আরও জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।