মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা উদয়ন ফাউন্ডেশন নামের একটি এনজিও।মাত্র দুই সপ্তাহ আগে উত্তর কাওন্নারা গ্রামের একটি বাসাবাড়িতে অফিস ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। এখন আমানত ফেরত পেতে প্রতিদিন ওই অফিসে ভিড় করছেন গ্রাহকেরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উদয়ন ফাউন্ডেশন সাটুরিয়ার উত্তর কাওন্নারা গ্রামে একটি শাখা অফিস খোলে; কিন্তু অফিসে না বসেই সাটুরিয়া এবং ধামরাইয়ের বিভিন্ন হাটবাজার ও বাড়ি গিয়ে ঋণ দেওয়ার কথা বলে টাকা তোলেন কর্মীরা। ২০ হাজার টাকা জমা হলে গ্রাহককে দুই লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হবে বলে তাঁরা প্রতিশ্রুতি দেন। এই প্রলোভনে পড়ে তিন শতাধিক গ্রাহক অর্ধকোটি টাকা জমা করেন। ঋণের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে তাঁরা এককালীন টাকা নিয়েছেন বলে জানান গ্রাহকেরা।
বালিয়াটি বাজারের ব্যবসায়ী পলাশ বলেন, ‘উদয়ন ফাউন্ডেশন নামের এনজিও ঋণ দেবে বলে আমার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা জমা নেয়। জমা দেওয়ার এক সপ্তাহ পর ঋণ দেওয়ার কথা। এক সপ্তাহ পর অফিসে ঋণের জন্য গেলে জানতে পারি, তাঁরা অফিস গুটিয়ে চলে গেছেন।’
খলিলাবাদ গ্রামের ব্যবসায়ী শামীম হোসেন বলেন, ‘দ্রুত সময়ে ঋণ পাওয়ার আশায় আমি ২০ হাজার টাকা জমা দিই। এক সপ্তাহ পর ঋণের জন্য গেলে অফিসে তালা ঝুলতে দেখি। আমার মতো অনেক ভুক্তভোগী এখন পথে বসার উপক্রম হয়েছেন।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাওয়ালীপাড়া বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, সঞ্চয়ের টাকা নেওয়ার সময় তাঁরা কোনো পাসবই তাঁদের দেননি। উদয়ন ফাউন্ডেশনের একটি শিটে সঞ্চয়ের টাকা উত্তোলন করেন তারা। ঋণ দেওয়ার সময় পাসবই দেওয়া হবে, তখন এই টাকা লিখে দেবে বলে জানান।
বাড়ির মালিক মো. ফজলুর রহমান বলেন, ‘গত ২০ নভেম্বর আমার বাড়ির দোতলায় একটি রুমভাড়া নেওয়ার কথা বলেন। এ কথা বলে কিছু ফার্নিচার আনেন। ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখ থেকে ভাড়া চলবে। ভাড়া দেওয়ার আগে তাঁদের কাছে পরিচয়পত্র এবং এনজিওর নথিপত্র চাওয়া হয়; কিন্তু অফিসে ওঠার আগেই তাঁরা মানুষের কাছ থেকে সঞ্চয়ের নামে টাকা নিয়ে সটকে পড়েন।’
গ্রাহকদের কাছ থেকে পাওয়া উদয়ন ফাউন্ডেশনের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মো. সায়েম প্রামাণিকের মোবাইল ফোন নম্বরে গতকাল শনিবার আজকের পত্রিকা অফিস থেকে যোগাযোগ করা হলে নম্বরটা নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার এক ব্যক্তির বলে জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আরা জানান, ঘটনাটি তাঁর জানা নেই। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।