হোম > অপরাধ

সুদে সর্বস্বান্ত মানুষ, ছাড়ছে ভিটেমাটি

আরিফুর রহমান মিঠু, শাজাহানপুর (বগুড়া)

মাছের ব্যবসা করার জন্য ৮ বছর আগে সুদে ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন শ্যামল মোহন্ত। দাদন ব্যবসায়ীকে প্রতিদিন সুদ দিতে হতো ২০০ টাকা। ৬ বছর সুদ দেওয়ার পর আসল আর শোধ করতে পারছিলেন না তিনি। সুদের কারবারির গালিগালাজ ও অব্যাহত হুমকি থেকে বাঁচতে দুই বছর আগে এক রাতে সপরিবারে পৈতৃক ভিটেমাটি ছেড়ে পালিয়ে যান শ্যামল। এরপর আর কখনো বাড়ি আসতে পারেননি তিনি।

শ্যামল (৪০) বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার আমরুল ইউনিয়নের ডেমাজানী পালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। ওই গ্রামে গেলে তাঁর বড় ভাই মৎস্য ব্যবসায়ী প্রশান্ত মোহন্ত (৪৫) এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, দাদন ব্যবসায়ী একই গ্রামের নিত্যানন্দ দাস (৫২)। সুদের কারবারের পাশাপাশি তাঁর আড়িয়া ইউনিয়নের আড়িয়া বাজারে মাছের আড়তের ব্যবসাও আছে।

প্রশান্ত নিজেও ঋণের ভারে জর্জরিত। এক বছর আগে নিত্যানন্দের কাছ থেকে মাছ ব্যবসার জন্য ৫০ হাজার টাকা সুদে নিয়েছিলেন। সেই টাকায় প্রতিদিন ৫ হাজার টাকা সুদ দিতে হয়। প্রায় ৪ মাস হলো প্রশান্ত আর সুদের টাকা দিতে পারছেন না। চক্রবৃদ্ধি হারে এখন সুদাসলে সেই টাকা অনেক হয়েছে। টাকার জন্য প্রতিদিন নিত্যানন্দ চাপ দেন। ভিটেমাটি বিক্রি করেও সেই টাকা শোধ হবে না বলে জানান প্রশান্ত।

একই গ্রামের সুবল চন্দ্র দাস (৬৫) বলেন, ‘প্রয়োজনে নিত্যানন্দের কাছ থেকে কখনো ১০ হাজার, কখনো ২০ হাজার টাকার মাছ নিয়েছি। ১০ বছর আগে নিত্যানন্দ আমাকে জানান, তাঁর কাছে আমার ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা দাঁড়িয়েছে। সেই টাকার প্রতিদিন ২ হাজার ৬০০ টাকা হারে সুদ ধরেন। দুই মাস ধরে টাকা দেওয়া বন্ধ করেছি। এ জন্য তিনি আমাকে প্রতিদিন অপদস্থ করছেন।’

পালপাড়া গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী বলরামসহ অনেকে আজকের পত্রিকাকে বলেন, শুধু ডেমাজানী পালপাড়া গ্রামের অন্তত ১২টি পরিবার নিত্যানন্দ দাসের সুদে আটকে সর্বস্বান্ত হয়েছে। এর বাইরেও আমরুল ইউনিয়নের রাধানগর হিন্দুপাড়াসহ বিভিন্ন জায়গায় নিত্যানন্দের সুদে আটকে মানবেতর জীবন যাপন করছেন অনেকে। প্রতিকার না পাওয়ার আশঙ্কায় ভুক্তভোগীরা কেউ তাঁর বিরুদ্ধে কোথাও অভিযোগ দেন না।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নিত্যানন্দ দাস। তিনি বলেন, ‘আড়িয়া বাজারে আমার মাছের আড়ত থেকে ওরা (সুদ নেওয়া ব্যক্তিরা) মাছ বাকি নিয়েছিলেন। আইপিএলসহ বিভিন্ন জুয়া খেলে টাকা হেরে এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।’

শুধু আমরুল ইউনিয়ন নয়, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে দাদন ব্যবসা বিস্তার লাভ করেছে। সুদে জড়িয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন অনেক মানুষ।

চুপিগর ইউনিয়নের কচুয়াদহ পূর্বপাড়া গ্রামের দাদন ব্যবসায়ী সাইদুলের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন আল আমিন (২৮)। জামানত হিসেবে তাঁর কাছ থেকে ব্যাংক চেকের খালি পাতা নেওয়া হয়েছিল। সময়মতো সুদাসলে টাকা দিতে না পারায় চেকে মোটা অঙ্ক বসিয়ে আদালতে মামলা করেন সাইদুল। সেই মামলায় ৭ মাস জেলহাজতে আছেন আল আমিন।

জানতে চাইলে সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘আল আমিনের বিরুদ্ধে ৮ লাখ ৯০ হাজার টাকার চেকের মামলা করেছিলাম। বর্তমানে আল আমিন জেলে আছেন। কত টাকা নিয়েছিলেন আর কত টাকা দিয়েছেন, এটা বড় কথা নয়।’

কচুয়াদহ গ্রামের সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক জাহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন জানান, তাঁদের গ্রামে এমন অনেকে আছেন, যাঁরা সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে ভিটেমাটি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। গ্রামের অধিকাংশ মানুষই ঋণগ্রস্ত।

জানতে চাইলে শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদা খানম বলেন, ‘এ রকম ঘটনায় আমার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয় নাই। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে সত্যতা মিললে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

কেরানীগঞ্জে মাদ্রাসায় বিস্ফোরণ: জেএমবির সঙ্গে জড়িতের অভিযোগে পরিচালক গ্রেপ্তার হন দুবার

ডেভিল হান্ট-২: এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার ৮ হাজার ৫৯৭

ডেভিল হান্ট-২: এক দিনে আরও ৬৯৮ জন গ্রেপ্তার

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

খুনের পর মোবাইল, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট, ‘গৃহকর্মী আয়েশা’র পরিচয় মেলেনি

সৌদি আরবে অপহরণ, ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি দেশে

পুলিশের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার

অতি লোভে তাঁতি নষ্ট: ৬০০ কোটি টাকা হারালেন নওগাঁর ৮০০ জন!

ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে নতুন ত্রাস ‘সন্ত্রাসী রনি’

পুরান ঢাকায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মামুন হত্যার ঘটনায় ২ শুটার শনাক্ত, গ্রেপ্তার যেকোনো সময়