হোম > অর্থনীতি > ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান

বিমা খাতে অ্যাকচুয়ারি মাত্র চার-পাঁচজন, সংকট কাটাতে ইনস্টিটিউট গঠনের পরিকল্পনা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎

বিমা খাতে অ্যাকচুয়ারি কর্মী সংকট নিরসন ও দক্ষ জনবল তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। এ লক্ষ্যে গঠন করা হবে অ্যাকচুয়ারিয়াল ইনস্টিটিউট, অ্যাকচুয়ারিয়াল বোর্ড অব স্ট্যান্ডার্ড সেটিং ও অ্যাকচুয়ারিয়াল কাউন্সিল। এ-সংক্রান্ত ‘অ্যাকচুয়ারিয়াল অর্ডিন্যান্স ২০২৫’-এর খসড়া এর মধ্যে তৈরি করে মতামত নেওয়া হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি) অনুমোদন দিলে নতুন এ কাঠামোর আওতায় তিনটি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করবে।

আজ বুধবার ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ভবনে আয়োজিত ‘বীমা শিল্পে তরুণদের কর্মসংস্থান: অ্যাকচুয়ারি পেশার বিকাশ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে এসব তথ্য জানান আইডিআরএর চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম।

বর্তমানে পুরো বিমা সেক্টরে মাত্র চার থেকে পাঁচজন অ্যাকচুয়ারি কাজ করছেন। এর মধ্যে মাত্র দুজন দেশে অবস্থান করছেন, অন্যরা বিদেশে থেকে কাজ করছেন। বিষয়টি নিয়ে আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, বিমা খাতে টেকসই উন্নয়নের জন্য অ্যাকচুয়ারিয়াল পেশাজীবীদের কোনো বিকল্প নেই। এ পেশা শুধু বিমা খাত নয়, পুরো আর্থিক খাতের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে শক্ত ভিত্তি দেয়।

অ্যাকচুয়ারি পেশা হলো এমন একটি বিশেষায়িত ক্ষেত্র, যেখানে গণিত, পরিসংখ্যান ও অর্থনীতির মডেল ব্যবহার করে ভবিষ্যতের আর্থিক ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা (যেমন গাড়ি দুর্ঘটনা বা অসুস্থতা) পরিমাপ করা হয়। এটি মূলত বিমাশিল্প, পেনশন তহবিল ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্ভাব্যতার বিশ্লেষণের মাধ্যমে অ্যাকচুয়ারিরা ভবিষ্যতের ঘটনাজনিত ঝুঁকি গাণিতিকভাবে নির্ধারণ করেন, যা নতুন বিমা পণ্য ডিজাইন, প্রিমিয়াম নির্ধারণ ও দাবি নিষ্পত্তিতে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি দেয়। উন্নত বিশ্বে অ্যাকচুয়ারিয়াল ডিগ্রিকে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ ও উচ্চ আয়সম্পন্ন পেশা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

অনুষ্ঠানে আইডিআরএর সদস্য (প্রশাসন) মো. ফজলুল হক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। মুখ্য আলোচক ছিলেন অ্যাকচুয়ারি ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন। বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাকচুয়ারি আফরিন হক, বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সাঈদ আহমেদ, এশিয়া ইনস্যুরেন্সের মো. ইমাম শাহীন, পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বি এম ইউসুফ আলী। এ ছাড়া বিমা খাতের প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে অ্যাকচুয়ারি ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন বলেন, অ্যাকচুয়ারি ছাড়া বিমাশিল্প চলতে পারে না। অথচ বর্তমানে কোম্পানিগুলো ক্লেইম ও প্রিমিয়ামের তথ্যের ওপর নির্ভর করে নিজেরাই অনুমাননির্ভর পণ্য তৈরি করছে। তিনি বলেন, ‘এর আগেও দেশে অ্যাকচুয়ারি তৈরির কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। অনেকে আমার সঙ্গে কাজও করেছেন। কিন্ত তাঁদের যথাযথ মূল্যায়ন ও চাকরির সুবিধা না দেওয়ায় তাঁরা দেশের বাইরে চলে গেছেন।’

আইডিআরএর বর্তমান উদ্যোগের বিষয়ে সোহরাব বলেন, সব বিমা কোম্পানি যদি আন্তরিকভাবে আইডিআরএকে সহযোগিতা করে, তাহলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে দেশে নতুন অনেক অ্যাকচুয়ারি তৈরি করা সম্ভব হবে।

দেশে কর্মরত একমাত্র তরুণ অ্যাকচুয়ারি আফরিন হক বলেন, স্কুল ও কলেজপর্যায়ে অ্যাকচুয়ারি বিষয়ে সচেতনতা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া উচিত। বাবা-মায়েরা শুধু ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ার পেশার প্রতিই গুরুত্ব দেন, ফলে অ্যাকচুয়ারি পেশা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি হয়নি।

বর্তমান বিমা আইন, ২০১০ অনুযায়ী, জীবনবিমা খাতে অ্যাকচুয়ারির নিয়োগ বাধ্যতামূলক হলেও সাধারণ বিমা খাতে তা নয়। এ বিষয়ে ড. সোহরাব উদ্দীন বলেন, নন-লাইফ খাতেও অ্যাকচুয়ারি বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন, কারণ, এটি বিজ্ঞানভিত্তিক পণ্য ও প্রিমিয়াম নির্ধারণের জন্য অপরিহার্য।

আইডিআরএর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব উদ্যোগে তিনজন অ্যাকচুয়ারি ট্রেইনি অফিসার তৈরির একটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, যা পরে তাঁদের অ্যাকচুয়ারি হতে সহায়তা করবে।

আইডিআরএর প্রতিবেদন: নিয়ম ভেঙে বাকিতে ব্যবসা কন্টিনেন্টাল ইনস্যুরেন্সের

ব্যাংকের নিট মুনাফা ছাড়া উৎসাহ বোনাস বন্ধ

একীভূত ৫ ব্যাংকের গ্রাহকদের অর্থ ফেরত: নির্দেশনা না থাকায় অনিশ্চয়তা

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকের টাকা ফেরতে নতুন আশা দিলেন গভর্নর

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন: কোটিপতি হিসাব বাড়ছেই

এক ব্যক্তি ও তিন প্রতিষ্ঠানকে ১৬ কোটি টাকা জরিমানা

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক উদ্বোধন বৃহস্পতিবার, তোলা যাবে ২ লাখ টাকা

দেশের সবচেয়ে বড় ইসলামি ব্যাংক পেল চূড়ান্ত অনুমোদন

আবারও প্রাইম ব্যাংকের চেয়ারম্যান হলেন তানজিল চৌধুরী

ব্যাংকিং খাতের খারাপ অবস্থার মূলে রাজনীতিকরণ: গভর্নর