প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এই শুল্ক থেকে প্রায় ২১ বিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত রাজস্ব পেলেও গত জুলাই মাসে দেশটির বাজেটে ঘাটতি ২০ শতাংশ বেড়ে ২৯১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট এ তথ্য জানিয়েছে। রাজস্ব বাড়ার চেয়ে ব্যয় বাড়ার হার বেশি হওয়ায় এ ঘাটতি বেড়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে রাজস্ব সংগ্রহ ২ শতাংশ বেড়ে ৩৩৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। তবে সরকারি ব্যয় ১০ শতাংশ বেড়ে ৬৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা জুলাই মাসের জন্য একটি রেকর্ড। এর ফলে বাজেটে ঘাটতি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯ শতাংশ বা ৪৭ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে।
ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় এ বছর ব্যবসায়িক দিন কম ছিল। এই পার্থক্য সমন্বয় করলে রাজস্ব প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার বেশি হতো এবং ঘাটতি ২৭১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াত। বছরের শুরু থেকে ট্রাম্পের আরোপিত উচ্চ শুল্কহারের কারণে জুলাই মাসে নেট শুল্ক রাজস্ব প্রায় ২৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই সময়ের ৭ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার থেকে বেশি।
যদিও ট্রাম্প তাঁর শুল্ক থেকে মার্কিন কোষাগারে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার জমা হওয়ার কথা বারবার উল্লেখ করছেন, তবে এই শুল্কের খরচ মূলত আমদানি করা কোম্পানিগুলোকেই বহন করতে হয়, যার কিছু অংশ পণ্যের উচ্চমূল্যের মাধ্যমে ভোক্তাদের ওপর চাপানো হয়।
শুল্ক আরোপের পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট হয়েই বিভিন্নভাবে সরকারি ব্যয় কমানোর উদ্যোগ নেন ট্রাম্প। বিভিন্ন বিভাগে অনেক কাটছাঁট করা হয়। তবে এত কিছুর পরেও চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে মোট বাজেট ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৬২৯ ট্রিলিয়ন ডলারে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ শতাংশ বেশি। এ সময়ের মধ্যে মোট রাজস্ব ৬ শতাংশ বেড়ে ৪ দশমিক ৩৪৭ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছালেও ব্যয় ৭ শতাংশ বেড়ে ৫ দশমিক ৯৭৫ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
সরকারের স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি (মেডিকেয়ার ও মেডিকেড), সামাজিক নিরাপত্তা পেনশন প্রোগ্রাম ও সরকারি ঋণের ওপর সুদের ব্যয় বাড়ার কারণে এই ঘাটতি আরও বেড়েছে। উদাহরণস্বরূপ, স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচির খরচ ১০ শতাংশ বেড়ে ১ দশমিক ৫৫৭ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা শুল্ক থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের চেয়ে অনেক বেশি।