ভ্যাট আদায় হলেও অনেক সময় তা সরকারের কোষাগারে পৌঁছায় না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দীন আহমেদ। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, উন্নয়নের জন্য ভ্যাট একটি মডার্ন সিস্টেম। এটা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। জিডিপির তুলনায় ভ্যাট তেমন নেই।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ভ্যাট যেন সরকারের কোষাগারে পৌঁছায়। আমার দেশে একটা দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, ভ্যাট আদায় হলেও সরকারের কোষাগারে অনেক সময় পৌঁছায় না। বিদেশে ভ্যাট দেওয়া ছাড়া ক্রয় করা যায় না। কিন্তু আমাদের দেশে সব স্থানে ভ্যাটের বিষয়টি পৌঁছায়নি।’
সালেহউদ্দিন বলেন, ‘কর জিডিপি এত কম। সরকারের সম্পদ না বাড়ালে কাজ করব কীভাবে? রাজস্ব বাড়াতে হবে। কোনো কোনো দেশে কর জিডিপি অনুপাত ২৬ শতাংশের কারণে সে দেশ সেবা পায়। আমাদের দেশে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। যেমন–আমাদের দেশে যদি হাসপাতাল ও শিক্ষায় সেবা পাওয়া যায়, তাহলে মানুষ স্বেচ্ছায় রাজস্ব দিতে এগিয়ে আসবে।’
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এনবিআরকে বলব, পরিধি বাড়ান, আধুনিকায়ন করেন। সম্পূরক ডিউটি কমান। না হলে বেশি আগানো যাবে না। কর দিলাম, সেবা পাব না। কর দিলে কী লাভ হলো—এই প্রশ্ন যেন করতে না পারে। সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে ও থাকবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক বলেন, অনেকগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মোমেনটাম তৈরি হয়েছে। সেটাকে ধরে রাখতে হবে। অটোমেটেড করা বড় সাফল্য। ভ্যাট অব্যাহতি কমেছে। এর মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি তৈরি হয়েছে।
আন্তর্জাতিক চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ভ্যাটের বিরোধিতা শুরু থেকে ছিল। ভ্যাট আদায় যতটুকু হওয়ার কথা ছিল, সে তুলনায় পিছিয়ে আছি। তবে সম্ভাবনা রয়েছে। একদিকে ভোক্তাকে ভ্যাট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের ভ্যাট আদায় করে এনবিআরকে দিতে হবে। সেখানে কোনো ব্যত্যয় করা যাবে না।’
ভ্যাট না দিলে কী হবে, সে বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে বলে জানিয়েছেন এফআইসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আজমান।
এদিকে ‘সময়মতো নিবন্ধন নেব, সঠিকভাবে ভ্যাট দেব’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজধানীসহ দেশের সব বিভাগীয় শহর ও কমিশনার কার্যালয়ে উদ্যাপন হচ্ছে জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ।