হোম > অর্থনীতি

গয়না ছাড়া আর কোন কোন খাতে সোনার চাহিদা বাড়ছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

হিন্দুদের দীপাবলি উৎসব উপলক্ষে সোনার গয়না কেনার প্রচলন রয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

সোনার দাম হু হু করে বাড়ছে। প্রায় দৈনিকই নতুন রেকর্ড হচ্ছে। সোনা এখন আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ২০০ ডলারের সীমা ছাড়িয়েছে।

সব মিলিয়ে চলতি ২০২৫ সাল সোনার জন্য একটি অভূতপূর্ব বছর। বাজারের এই অবস্থা চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকলে, এটা ১৯৭৯ সালের পর সেরা বছর হবে। কারণ এ বছর এখন পর্যন্ত সোনার দাম বছরওয়ারি বেড়েছে প্রায় ৫৭ শতাংশের বেশি।

শুধু সোনাই নয়, মূল্যবান অন্য ধাতুর দামও বেড়েছে। যেমন প্লাটিনামের দাম বেড়েছে ৮০ শতাংশ আর রুপার ৭৫ শতাংশ।

ভারতের বাইরে সোনার গয়নার ব্যবহার কম। এরপরও বিশ্বে মোট চাহিদার সিংহভাগই ব্যবহৃত হয় গয়নায়। ব্যবহারকারী দেশের মধ্যে শীর্ষে ভারত। বিশ্বজুড়ে সোনার মোট চাহিদার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ যায় গয়না শিল্পে, ঐতিহাসিকভাবেই এই মূল্যবান ধাতুর প্রধান ব্যবহারকারী এই খাত।

তবে, সাম্প্রতিক তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গয়না বা জুয়েলারি খাত ছাড়াও সোনা বিশ্ব অর্থনীতিতে তিনটি প্রধান খাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে—বিনিয়োগ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ এবং প্রযুক্তি/শিল্প। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের তথ্য অনুসারে, এই খাতগুলোতে সোনার বার্ষিক চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। এই খাতগুলোই বিশ্বজুড়ে সোনার বাজারকে প্রভাবিত করছে।

প্রধান ব্যবহারকারী খাত:

জুয়েলারি খাতের পর সোনার সবচেয়ে বড় তিনটি ব্যবহারকারী খাত এবং তাদের চাহিদার পরিমাণ (২০২৪ সালের পূর্ণাঙ্গ বছরের তথ্য, টন হিসাবে) নিচে তুলে ধরা হলো:

(সূত্র: ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল, ২০২৪ সাল)

ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের গোল্ড ডিমান্ড ট্রেন্ডস রিপোর্ট থেকে ও প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকের উপাত্ত মিলিয়ে ২০২৫ সালের প্রথম অর্ধবছরের একটি চিত্র পাওয়া যায়। এর মধ্যে ওটিসি মার্কেট একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে উঠে এসেছে। ওভার-দ্য-কাউন্টার বা ওটিসি মার্কেট হলো আনুষ্ঠানিক পুঁজিবাজারের বাইরে ব্রোকারের মাধ্যমে কেনাবেচা।

চলতি বছরের প্রথমার্ধে মোট সোনার চাহিদা (ওটিসি-সহ) প্রায় ২ হাজার ৪৫৫ টনে পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩ শতাংশ বেশি। ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং উচ্চ মূল্যের মধ্যে শক্তিশালী বিনিয়োগের কারণে অবশ্য গয়নার চাহিদা দুর্বল হয়েছে।

১. বিনিয়োগ: অনিশ্চয়তার সময়ে ‘নিরাপদ আশ্রয়’

জুয়েলারি শিল্পের পরেই সোনার সবচেয়ে বড় বাজার হলো বিনিয়োগ খাত। অর্থনৈতিক অস্থিরতা, মূল্যস্ফীতি এবং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার সময় বিনিয়োগকারীরা সোনাকে ‘নিরাপদ সম্পদ’ হিসেবে দেখেন।

এ ক্ষেত্রে সোনার বার, সরকারি কয়েন এবং গোল্ড এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ড গোল্ড (ইটিএফ)-এর মাধ্যমে সোনা কেনা হয়।

ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে সোনার বিনিয়োগের চাহিদা ১ হাজার ১৮০ টন-এ পৌঁছে চার বছরের রেকর্ড ভেঙেছে, এটি পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি।

২. কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং প্রাতিষ্ঠানিক ক্রয়: রিজার্ভ বহুমুখীকরণ

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ভারসাম্য আনতে সোনা কেনে। এটি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এবং একক মুদ্রার (যেমন মার্কিন ডলার) ওপর নির্ভরতা কমাতে সহায়তা করে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা কেনার ধারা অব্যাহত রয়েছে। ২০২৪ সালে তারা ১ হাজার ৪৬ টন সোনা কিনেছে। এটি টানা তৃতীয় বছর যেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা কেনা ১ হাজার টন ছাড়িয়েছে। এটি বিশ্বজুড়ে সোনার দামে প্রভাব ফেলছে।

৩. প্রযুক্তি ও শিল্প: ইলেকট্রনিকসের অপরিহার্য উপাদান

প্রযুক্তি ও শিল্প খাতে সোনার ব্যবহার কম হলেও এটি অত্যাবশ্যক। এর মূল কারণ হলো সোনার চমৎকার বিদ্যুৎ পরিবাহিতা এবং ক্ষয় বা মরিচা প্রতিরোধ ক্ষমতা।

ইলেকট্রনিকস: প্রযুক্তি ও শিল্প খাতের মোট ব্যবহারের প্রায় ৭০ শতাংশ সোনা ব্যবহৃত হয় এই খাতে। স্মার্টফোন, কম্পিউটার, এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের সার্কিট বোর্ড, কানেক্টর এবং সুইচে সোনা ব্যবহার করা হয়। এতে যন্ত্রাংশের দীর্ঘস্থায়িত্ব ও উচ্চ কার্যকারিতা নিশ্চিত হয়।

এআই প্রযুক্তির প্রভাব: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে এই খাতে সোনার চাহিদা বাড়ছে। এআই প্রসেসর এবং উচ্চ কার্যক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটিং চিপে (এইচপিসি) সোনা ব্যবহৃত হচ্ছে।

অন্যান্য শিল্প: ইলেকট্রনিকস ছাড়াও ডেন্টিস্ট্রি (দাঁতের চিকিৎসা), চিকিৎসাবিদ্যা এবং মহাকাশ গবেষণার মতো বিশেষায়িত ক্ষেত্রেও সোনা ব্যবহার করা হয়।

ইসলামী ব্যাংক পরিচালনা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত

রিজার্ভ চুরি: ৯১ বারের মতো পেছাল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ

শেয়ারবাজারে তথ্যের স্বচ্ছতায় এআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে: বিআইসিএম নির্বাহী প্রেসিডেন্ট

প্রথমবার চীনের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ১ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়াল

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন: কোটিপতি হিসাব বাড়ছেই

পেঁয়াজ আমদানি: রাতারাতি পাইকারিতে দাম কমেছে কেজিতে ২৫ টাকা

বেক্সিমকো সুকুক: মূলধন ফেরত অনিশ্চিত, মেয়াদ বাড়ানোর সুপারিশ আইসিবির

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন: বিদেশি ঋণ বেড়েছে ৪২ শতাংশ, দ্বিগুণ হলো পরিশোধের চাপ

দিনে ১৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানি, ভারতের চাষিদের মুখে হাসি ফেরাল বাংলাদেশ

৬ দিনে রেমিট্যান্স এল ৬৩ কোটি ২০ লাখ ডলার