ইসরায়েল-হামাসের সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতির সময় উত্তর গাজায় ধ্বংসস্তূপের মধ্যে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়। গত মঙ্গলবারের এই অভিযানে ব্যাংক অব প্যালেস্টাইনের জরাজীর্ণ দুটি শাখা থেকে ১৮০ মিলিয়ন ইসরায়েলি শেকেল (৫ কোটি ডলার) উদ্ধার করা হয়। এসব অর্থ পরে মুদ্রাসংকটে থাকা দক্ষিণ গাজায় নেওয়া হয়।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
যে এলাকা থেকে মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানে এখন মাত্র একটি ভবন অক্ষত অবস্থায় আছে। দক্ষিণ গাজায় নগদ অর্থের ঘাটতি এখন চরমে। প্রায় ২৩ লাখ শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে এই অঞ্চলে। তারা নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে ত্রাণ ও মানবিক সহায়তার ওপর।
এই অবস্থায় ব্যাংক অব প্যালেস্টাইনের কর্মকর্তারা যুদ্ধবিরতিকে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা অর্থনীতির পতন ঠেকাতে উত্তর গাজায় পড়ে থাকা শেকেল উদ্ধার করেন। এই উদ্ধার অভিযানের জন্য ব্যাপক পরিকল্পনার প্রয়োজন ছিল। ‘কনঅপস-গাজা’ নামের এই অভিযান পরিচালিত হয় জাতিসংঘের সমর্থন, রক্ষীবাহিনী ও ইসরায়েলের ছাড়পত্র নিয়ে।
বিষয়টি এতই জটিল ও বিস্তৃত ছিল যে পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত একজন ব্যক্তি ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে অভিযানের কিছু বিবরণ বাদ দিতে অনুরোধও করেন।
অভিযানে জড়িত আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘মোটামুটি ৯ লাখ ব্যাংক নোটের ওজন ছিল প্রায় এক টন, যা একটি ছোট শিপিং কনটেইনার পূরণ করার জন্য যথেষ্ট। এটি অবশ্যই একটি অস্বাভাবিক অভিযান ছিল। পরাবাস্তব কিন্তু প্রয়োজনীয়।’
মিশন সম্পূর্ণ হয়েছে এবং নোটগুলো এখন মুদ্রাসংকট কাটাতে দক্ষিণ গাজায় পৌঁছেছে। তবে সেখানেও স্বস্তি নেই, দক্ষিণ গাজাতেও ইসরায়েল তীব্র বোমা হামলা চালাচ্ছে। ফলে অর্থের নগদ প্রবাহ বজায় রাখা জটিল হয়ে পড়েছে ব্যাংক অব প্যালেস্টাইনের পক্ষে।
দুই মাস ধরে গাজায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। ফলে ব্যাংকের কর্মীরা প্রাইভেট কারে বন্ধ শাখার ভল্ট থেকে নগদ সরিয়ে এটিএমে রেখেছেন মুদ্রাপ্রবাহ সচল রাখতে, যদিও সেখানেও ঘন ঘন বিভ্রাট দেখা দিচ্ছে।
ব্যাংক অব প্যালেস্টাইনের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা এটিএম এবং তুলনামূলকভাবে নিরাপদ এলাকায় অবস্থিত শাখাগুলোতে অর্থ স্থানান্তর করেছি। গাজার দক্ষিণ এবং মাঝখানে শুধু ছয়টি বিওপি ক্যাশ ডিসপেনসার কাজ করছে।’