হবিগঞ্জে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের মেয়েকে লুকিয়ে রেখে অপহরণ মামলা করা হয়েছিল ২০১২ সালে। এই মামলায় সাড়ে ১১ বছর ধরে আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন চার ব্যক্তি। এর মধ্যে জেল খেটেছেন তিনজন। দীর্ঘ সাড়ে ১১ বছর পর জানা গেল অপহরণ মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ছিল। গতকাল সোমবার সেই নারীকে নারায়ণগঞ্জ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উদ্ধার হওয়া ওই নারীর নাম জহুরা খাতুন শিমু। তিনি সদর উপজেলার রতনপুর গ্রামের বাসিন্দা। গতকাল রাতে নারায়ণগঞ্জ থেকে তাঁকে হবিগঞ্জ নিয়ে আসা হয়। আজ মঙ্গলবার পরিবারের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ জানায়, শিমুকে অপহরণ করা হয়েছে বলে ২০১২ সালের ১১ নভেম্বর অপহরণ মামলা করেন তাঁর মা আমেনা খাতুন। একই গ্রামের আব্দুর রশিদ, সুরাব আলী, আব্বাস মিয়া ও হারুন মিয়াকে এ মামলায় আসামি করা হয়। আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। পরে চারজনই উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান। কিন্তু নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন সাড়ে ১১ বছর ধরে।
সম্প্রতি মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে অপহৃত ওই নারীকে উদ্ধারের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক। এরপর হবিগঞ্জ সদর মডেল থানা-পুলিশ সোমবার সকালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা থেকে শিমুকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সনক কান্তি দাশ বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শিমু জানিয়েছেন, তাঁকে কেউ অপহরণ করেননি। পরিবারের পরামর্শে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য তিনি সিদ্ধিরগঞ্জে ১১ বছর আত্মগোপনে ছিলেন। তিনি সিদ্ধিরগঞ্জের একটি গার্মেন্টসে কারখানায় চাকরি করতেন। নিয়মিত পরিবারের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হতো। বাড়িতে টাকাও পাঠাতেন তিনি।
শিমু আরও জানান, প্রতিপক্ষ পরিবারের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ ছিল তাঁদের। এরই জের ধরে তিনি আত্মগোপনে যান।
অপহরণ মামলাটি পুলিশ মিথ্যা উল্লেখ করে আদালতে দুইবার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। কিন্তু বাদীপক্ষের নারাজি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।