হোম > সারা দেশ > কুড়িগ্রাম

একজনের কার্ডে টিসিবি পণ্য কিনছেন আরেকজন, বেশি দামে অন্যত্র বিক্রি

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য কিনে বেশি দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন অনেক উপকারভোগী। একজনের কার্ড দেখিয়ে ডিলারের কাছ থেকে আরেকজন পণ্য কিনছেন। এমন সব অভিযোগ উঠেছে কুড়িগ্রামের উলিপুরের বিভিন্ন উপকারভোগীর বিরুদ্ধে। এতে টিসিবির কার্ড বিতরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয়দের মধ্যে।

আজ বুধবার উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের রেলগেট এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। সেখানে দেখা গেছে, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের উপকারভোগীদের কাছে টিসিবি পণ্য বিক্রি করছেন টিসিবি ডিলার ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া রাজু। উপকারভোগীরা সরকার নির্ধারিত মূল্যে চাল, ডাল ও তেল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। একজনের কার্ড অন্যজন নিয়ে এসেও পণ্য কিনেছেন। এসব কার্ডধারীর অনেককে ডিলার পয়েন্টের নিকটেই পাইকারদের কাছে চাল বিক্রি করে দিতে দেখা গেছে। 

ঘটনাস্থলে উপস্থিত পাইকার বাদশা ও তাঁর প্রতিনিধি জানান, উপকারভোগীরা টিসিবি ডিলারের কাছে প্রতিকেজি চাল ৩০ টাকা মূল্যে কিনে তাঁদের কাছে ৩৬ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন। তাঁরা এসব চাল কিনে বাজার মূল্যে বিক্রি করবেন। তবে অনেক উপকারভোগী চাল বিক্রি করলেও তেল ও ডাল বিক্রি করেন না। 

চাল বিক্রিকারী কয়েকজন উপকারভোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, টিসিবির চাল তাঁরা খেতে অভ্যস্ত নন। তাই তাঁরা বেশি দামে চাল বিক্রি করে দেন। অনেকে আবার উপকারভোগীদের কাছে কার্ড কিনে নিয়ে পণ্য উত্তোলন করে সেগুলো বেশি দামে বিক্রি করেন। বিক্রয়কারীদের মধ্যে এই সংখ্যাই বেশি বলে দাবি করেন এসব উপকারভোগী। 

ডিলার পয়েন্টের কাছে দাঁড়িয়ে দেখা গেছে, একজন ব্যক্তির হাতে অন্তত ১০-১২টি কার্ড। এসব কার্ডের বেশির ভাগে নারীদের নাম। তিনি একসঙ্গে অনেকের কার্ড নিয়ে পণ্য কিনে বিতরণ করছেন। রোমানা বেগম, আপেল বেগমসহ বেশ কয়েকজন নারীর নামে কার্ড থাকলেও পণ্য নিচ্ছেন পুরুষ ও তরুণেরা। বিতরণকারী ওই ব্যক্তি নিজের নাম জাকারিয়া দাবি করলেও তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 

অন্যের নামে পণ্য উত্তোলন ও বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে জানিয়ে ডিলার গোলাম কিবরিয়া রাজু বলেন, ‘প্রায় ৪০ শতাংশ উপকারভোগী টিসিবি থেকে পণ্য কিনে নেওয়া চাল বিক্রি করেন। এসব কার্ডধারীর বেশির ভাগই সামর্থ্যবান। সম্ভবত বাড়িতে চাল থাকায় তাঁরা টিসিবির চাল কিনে বেশি দামে বিক্রি করে দেন।’ 

জানার পরও ব্যবস্থা না নেওয়া প্রশ্নে রাজু বলেন, ‘এসব সুবিধাভোগীর তালিকা ও পরিবার পরিচিতি কার্ড বিতরণ করেছে ইউনিয়ন পরিষদ। তাঁদেরকে কার্ডের প্রাপ্যতা নির্ধারণ করেছেন চেয়ারম্যান-মেম্বাররা। আমরা শুধু কার্ড দেখে পণ্য বিক্রি করি। তবে আমার পয়েন্টের কাছে কোনো কার্ডধারী কিংবা পাইকারকে চাল বিক্রি করতে দেখলে আমি তাতে বাধা দিই।’ 

তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান অসুস্থ থাকায় তাঁর সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি। 

টিসিবি পণ্য নিয়ে একই ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে উপজেলার ধামশ্রেণি ইউনিয়ন থেকে। ওই গ্রামের কয়েকজন উপকারভোগী জানান, একজনের কার্ড নিয়ে আরেকজন পণ্য কিনছেন। এসব পণ্য বেশি দামে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রকৃত উপকারভোগী টিসিবির সুবিধা পাচ্ছেন না। আবার ডিলাররা এক ওয়ার্ডের পণ্য অন্য ওয়ার্ডে বিক্রি করায় উপকারভোগীদের রিকশা ভাড়া করে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে পণ্য কিনে আনতে হচ্ছে। অনেকের টাকা খরচের সাধ্য নেই। 

ধামশ্রেণি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সুবিধাভোগী মারুফ বলেন, ‘আগে আমার ওয়ার্ডের উপকারভোগীদের জন্য ওয়ার্ডের ঠাকুরবাড়ী বাজারে টিসিবি পণ্য বিক্রি হতো। কিন্তু অজানা কারণে এখন তা রিকশা ভাড়া করে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সোবহান বাজারে গিয়ে আনতে হয়। একজনের কার্ডে অন্যজন পণ্য কিনে বিক্রি করে দিচ্ছেন। এসব দেখার যেন কেউ নেই।’ 

সার্বিক বিষয় নিয়ে উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘বিষয়গুলো নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ডিলারদের সতর্ক করেছি। তাঁদেরকে আরও দৃঢ়ভাবে তদারকি করতে বলা হয়েছে। অনিয়মের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সমাবেশ থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনা, প্রাণ গেল কর্মীর

‘১০ লাখ দিলেই তুমি সভাপতি’ বেরোবি ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে অভিযোগ

‘সেবা বন্ধ থুইয়া মানুষোক জিম্মি করি আন্দোলন করেছে, গরিব মানুষ কোনঠে যাইবে’

স্থগিতাদেশ তুলে ব্রাকসুর নতুন রোডম্যাপ প্রকাশ

একটি শ্রেণি সংস্কার ছাড়াই ক্ষমতায় যেতে ‘ডাবল পাগল’ হয়ে গেছে: রেজাউল করীম

বাসের ধাক্কায় অটোরিকশার যাত্রী নিহত

পাঁচ দফা দাবিতে রংপুরে সমমনা ৮ দলের বিভাগীয় সমাবেশ আজ, দলে দলে আসছেন নেতা-কর্মীরা

শ্বশুর-জামাইকে পিটিয়ে হত্যায় জড়িতের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

নীলফামারীতে গৃহবধূকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে ২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড