চলছে শ্রাবণ মাস। বর্ষা মৌসুম। এই সময়ে টানা বৃষ্টি, স্যাঁতসেঁতে মাঠঘাট আর আকাশে মেঘের ঘনঘটা—এমন চিত্রই আমাদের কাছে চিরচেনা। কিন্তু উত্তরবঙ্গের জেলা পঞ্চগড়ে আজ বুধবার একদমই অন্য রকম সকালের চিত্র দেখা গেছে। ভোরবেলা ঘুম ভাঙতেই দেখা গেল—চারদিক কুয়াশায় ঢাকা। ঘাসে ঘাসে শিশির, রাস্তায় ঝাপসা আলো, যেন শীতকাল আগেভাগেই এসে পড়েছে।
এ দিন সকালে জেলা শহর এমনকি গ্রামের রাস্তায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হয়েছে যানবাহনকে। কুয়াশা এতটাই ঘন ছিল যে, অনেকে চোখের সামনে এমন দৃশ্য দেখে হতবাক।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাত কাজল দীঘি ইউনিয়নের কৃষক মো. শওকত আলী বলেন, ‘এই সময়টা রোপার মৌসুম। অথচ গত কয়েক দিন বৃষ্টিই নেই, তার ওপর আবার কুয়াশা। এমন আবহাওয়া আমাদের চাষাবাদের জন্য ভালো না। প্রকৃতি যেন তালগোল পাকিয়ে ফেলছে।’
একই এলাকার অন্য আরেক জন শিউলি বেগম বলেন, ‘ভোরে ঘুম ভেঙে দেখি, জানালার বাইরে ধোঁয়ার মতো কিছু! মনে হচ্ছিল, শীত পড়ে গেছে। কিন্তু গরমও কমে না, খুব অদ্ভুত একটা অনুভূতি।’
কলেজছাত্র মুরাদ মঞ্জিল বলেন, ‘সকালবেলা হঠাৎ কুয়াশা দেখে বন্ধুদের সঙ্গে ছবি তুলেছি, কিন্তু ভেবেছি—বর্ষাকালে এই দৃশ্য মানে কি কিছু গন্ডগোল হচ্ছে না আবহাওয়ায়?’
চা-দোকানি রুবেল ইসলাম বলেন, ‘এমন কুয়াশা গত ২০-২৫ বছরেও দেখিনি এই সময়। আগে জানতাম শীতে কুয়াশা হয়, এখন বর্ষাতেও শুরু। বুঝি না, আবহাওয়াও যেন পাল্টে গেছে।’
এদিকে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস জানায়, আজ সকাল ৬টা ও ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাত ও দিনের তাপমাত্রার ব্যবধান ছিল ৭-৮ ডিগ্রি, আর বাতাসে ছিল প্রচুর জলীয় বাষ্প—এই দুয়ের মিলে ঘন কুয়াশার সৃষ্টি।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, বাতাসে জলীয় বাষ্প বেড়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে ভোরে কুয়াশা তৈরি হয়েছে। এটা একটা অস্বাভাবিক পরিবেশগত পরিবর্তন, যা জলবায়ু পরিবর্তনের ইঙ্গিতও হতে পারে। এই সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।