দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত তীব্র হচ্ছে শীতের দাপট। আজ সোমবার তাপমাত্রার পারদ নেমে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, বাতাসের আর্দ্রতা ৯৭ শতাংশ।
ভোরের কনকনে ঠান্ডায় রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা ছিল। সূর্য ওঠার পর তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও সকালবেলার শীত স্পষ্টভাবেই অনুভূত হচ্ছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস জানায়, গত সপ্তাহজুড়ে তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রির আশপাশে। রবিবার ১২ দশমিক ৬, শনিবার ১৪ দশমিক ৭, শুক্রবার ১৪ দশমিক ৯, বৃহস্পতিবার ১৩ দশমিক ৯, বুধবার ১৪ দশমিক ৩, মঙ্গলবার ১৪ দশমিক ৬ ও সোমবার ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
শীত জেঁকে বসায় জনস্বাস্থ্যে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। হাসপাতালে বাড়ছে সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া ও ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা।
সদর হাসপাতালে শিশুকে নিয়ে আসা পূর্ণিমা আক্তার বলেন, ‘দিনে গরম, রাতে শীত—এই হেরফেরটা ছোট বাচ্চা সহ্য করতে পারে না। তাই দৌড়াতে হলো হাসপাতালে।’
দিনের বেলায় রোদে শীত বেশি না লাগলেও সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত শীতের তীব্রতা হঠাৎ বেড়ে যায়—এমনই বলছেন স্থানীয়রা।
ভ্যানচালক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘বিকেল পর্যন্ত থাহে ভালো, রাইতে আর ভোরে তো ঠান্ডায় গা-ও নড়ে না। ভ্যান লিয়াও চলা মুশকিল হয়। তবু পেটের দায়ে নামতে হয়েই।’
বালুশ্রমিক মুকুল মিয়া বলেন, ‘বালু তোলন লাগলে নদীত নাম্বাই লাগে। এই লাইনে কাম ছাড়া আর উপায় নাই। কিন্তু নদীর পানি এমন ঠান্ডা—পা দিতেই বরফের মতো লাগে। তবু পেটের দায়ে নামতে হয়, না হলে বাসায় চাল জুটবে কেমনে?’
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, ‘রাত বাড়লেই শীতের তীব্রতা বাড়ে। সকাল গড়ালে সূর্য উঠলেই তাপমাত্রা দ্রুত ওপরে ওঠে। আজ ১৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। মাসের শেষ দিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে।’
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কাজী মো. সাইমুজ্জামান বলেন, শীতার্ত মানুষের সহায়তায় সরকারিভাবে ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উপজেলাগুলোতে শীতবস্ত্র বিতরণ চলছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্যোগেও সহায়তা অব্যাহত রয়েছে।