ময়মনসিংহের ভালুকায় পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ বিদেশি ফল রামবুটান বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে। স্থানীয় উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান তাইফ এগ্রোর দুজন উদ্যোক্তা শেখ মামুন ও আশরাফ উদ্দিন পাঁচ বছর আগে ভালুকা উপজেলার বিরুনিয়া ইউনিয়নের গোয়ারী গ্রামে ৬ একর জমি লিজ নিয়ে রামবুটানের চাষ শুরু করেন।
২০২০ সালে তাঁরা থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করেন রামবুটানের ৪০০ চারা। শুরুতে অতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহারের কারণে কিছু চারা মারা গেলেও বর্তমানে বাগানে ২১২টি গাছ রয়েছে। ২০২৩ সালে এই বাগানে প্রথম ফলন আসে। এ বছর সব গাছেই ফল ধরেছে এবং ফলনও হয়েছে বাম্পার। উদ্যোক্তাদের আশা, প্রতিটি গাছে ৮০ থেকে ১২০ কেজি পর্যন্ত ফল মিলবে।
তাঁরা জানান, এই মৌসুমে বাগান থেকে ১০ মেট্রিক টনের বেশি রামবুটান উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা। বর্তমানে প্রতি কেজি রামবুটান ১ হাজার ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তাইফ এগ্রোর উদ্যোক্তা শেখ মামুন বলেন, ‘শুরুতে আম, পেয়ারা, লিচুসহ প্রচলিত ফলের চাষ করলেও বাজারে কাঙ্ক্ষিত দাম মেলেনি। তাই ভিন্ন কিছু করার চিন্তা থেকে রামবুটান চাষে নামি। রোপণের দেড় বছরের মাথায় ফল ধরা শুরু হয়।’
অন্য উদ্যোক্তা আশরাফ উদ্দিন শুভ বলেন, ‘শুরুতে গাছে মড়ক দেখা দিয়েছিল। পরে কৃষি বিভাগের পরামর্শে রাসায়নিক বাদ দিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহারের ফলন বেড়েছে দ্বিগুণ। এবার সব গাছে ফল এসেছে।’
এই রামবুটান ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ রঙের হলেও পাকার পর তা উজ্জ্বল লাল হয়ে ওঠে। রসালো ও সুস্বাদু এই ফল দেখতে প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় করছেন বাগানে। অনেকে রামবুটান চাষ শেখার আগ্রহও প্রকাশ করছেন।
ভালুকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুসরাত জামান বলেন, ‘রামবুটান খেতে খুবই সুস্বাদু এবং এতে প্রচুর ভিটামিন সি ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। এটি বিদেশি ফল হলেও আমাদের দেশে সফলভাবে উৎপাদন সম্ভব, তার প্রমাণ ভালুকার এই বাগান। আমরা আগ্রহী কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে পাশে থাকব।’