মৌলভীবাজারে ছুরিকাঘাতে আইনজীবী সুজন মিয়া (৩৬) হত্যার প্রতিবাদ ও জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর সহকর্মীরা বিক্ষোভ–মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন। আজ সোমবার জেলা আইনজীবী সমিতির আদালত বর্জন করে তাঁরা এসব কর্মসূচি পালন করেন।
জানা গেছ, গতকাল রোববার রাত ১১টার দিকে মৌলভীবাজার পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে দুর্বৃত্তরা সুজন মিয়াকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। তিনি জেলা বারের সদস্য ছিলেন। আজ বিকেল সাড়ে ৫টায় শহরের পৌর ঈদগাহ মাঠে সুজন মিয়ার জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হবে বল পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সুজন মিয়া শহরের পূর্ব হিলালপুর এলাকার জহিরুল ইসলামের ছেলে। তাঁদের পৈতৃক বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পৌর এলাকায়। গত ৯ বছর ধরে তাঁরা মৌলভীবাজার শহরে বসবাস করেন।
পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাত ১১টার দিকে মৌলভীবাজার পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে একটি ফুচকার দোকানে বসে সুজন মিয়াসহ কয়েকজন মিলে ফুচকা খাচ্ছিলেন। এ সময় সুজনের পাশে ৫-৬ জন দুর্বৃত্ত দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের মধ্যে কয়েকজন হঠাৎ এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে আশপাশের লোকজন সুজনকে উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সুজনের বুকে ধারালো অস্ত্রের একাধিক জখম রয়েছে। তবে কী কারণে সুজনকে হত্যা করা হয়েছে, তা এখনো জানা যায়নি।
এদিকে এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনায় শহরজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সুজনের এমন মৃত্যুতে ক্ষোভ জানিয়ে পৌরসভার সামনে ফুচকার দোকানগুলোতে ভাঙচুর করা হয়। মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যরা আদালত বর্জন করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। একই সঙ্গে তাঁরা খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
জেলার আইনজীবী সমিতির সদস্যরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভার কার্যালয়ের সামনে সড়ক দখল করে অবৈধভাবে ফুচকা বিক্রি করা হচ্ছে। এগুলো পৌরসভা থেকে ভাড়া দেওয়া হয়। এ ছাড়া এখান থেকে নিয়মিত চাঁদা নেওয়া হয়। এখানে সন্ধ্যা নামলেই শহরের কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এসে আড্ডা জমায়।
মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইনজীবী সুজন হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত ও আটকের চেষ্টা চলছে। নিহত ব্যক্তির পরিবার এ ঘটনায় মামলা করবে বলে জানিয়েছে। ঘটনাটির তদন্ত চলছে। তবে কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে, তা জানা যায়নি।