ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন তানভীর আহমেদ নামের কিশোরগঞ্জের একটি স্কুলের পরিচালনা কমিটির বরখাস্ত হওয়া সভাপতি। আজ শনিবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে কিশোরগঞ্জ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা নিশ্চিত করেন তিনি।
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার বালিয়া উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন তানভীর আহমেদ। তাঁর দাবি, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শামছ উদ্দিনকে বরখাস্ত করে কমিটি। একই সঙ্গে এই বরখাস্তের সিদ্ধান্ত অনুমোদনের জন্য বোর্ডে চিঠি পাঠায়। কিন্তু শিক্ষা বোর্ড ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ২০ নভেম্বর উল্টো তাঁকেই বরখাস্তের চিঠি পাঠায়। চিঠিতে সই করেন বোর্ডের সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক। বরখাস্তের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, বিদ্যালয় পরিদর্শক, জেলা প্রশাসক, ইউএনওসহ মোট ৯ জনকে বিবাদী ২৫ নভেম্বর করিমগঞ্জ সিনিয়র সিভিল জজ আদালতে মামলা করেছেন তানভীর আহমেদ।
সাংবাদিকের কাছে তানভীর আহমেদ বলেন, ‘যেখানে বোর্ডের উচিত ছিল কমিটির সিদ্ধান্তে বরখাস্ত হওয়া সহকারী প্রধান শিক্ষক শামছ উদ্দিনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া, সেখানে উল্টো আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এটা আইনত অবৈধ।’ তিনি আরও বলেন, ‘বরখাস্তের আগে আমাকে কোনো কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়নি এবং কোন অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে তাও উল্লেখ করা হয়নি। এ ছাড়া বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী চেয়ারম্যানের নির্দেশে বিদ্যালয় পরিদর্শক বরখাস্তের চিঠি দেওয়ার কথা। কিন্তু এখানে নিয়মভঙ্গ করে চিঠি দিয়েছেন সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক।’
তানভীর আহমেদ অভিযোগ করেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে থাকাকালে শামছ উদ্দিন ছয় বছর ধরে একসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে দুটি বেতন গ্রহণ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের দাতাসদস্য নূরুল ইসলাম, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য আবদুস সোবহান, সাবেক অভিভাবক সদস্য খুরশিদ উদ্দিন, ছাত্র অভিভাবক আব্দুস সাত্তার, সোহরাব উদ্দিন, নোয়াবাদ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম মানিক।
বালিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শামছ উদ্দিন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা ষড়যন্ত্রমূলক ও মিথ্যা। সম্প্রতি বোর্ডই বরং অ্যাডহক কমিটির সভাপতিকে বরখাস্ত করেছে। আর আমাকে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে পুনর্বহালের জন্য চিঠি দিয়েছে বোর্ড। এখন নতুন করে পুরোনো বিষয়গুলো সামনে আনছে যেন আমি স্বপদে ফিরতে না পারি।’
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী সারোয়ার আলম বলেন, রোববার (৩০ নভেম্বর) আদালতে মামলার শুনানি হবে।
এ বিষয়ে কথা বলতে সিভিল আদালতের জিপি জালাল মোহাম্মদ গাউসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও কোনো সাড়া মেলেনি।
মামলার ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি অবগত নই। অফিসে গিয়ে বলতে পারব।’