মেহেরপুরের বিভিন্ন বিপণিবিতানে ঈদকে কেন্দ্র করে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। প্রচণ্ড গরমে এবার দোকানগুলোতে সুতি পোশাকের সমারোহ বেশি। এসব বিপণিবিতানে ছেলেদের জন্য রয়েছে জিন্স প্যান্ট, শার্ট, পাঞ্জাবি ও গেঞ্জি। আর মেয়েদের জন্য রয়েছে সালোয়ার-কামিজসহ হরেক রকমের পোশাক। এবারের ঈদে বিপণিবিতানে গরমের কারণে সুতি কাপড়ের পোশাকের প্রাধান্য অনেক বেশি।
এ ছাড়া এসব বিপণিবিতানে ভারতীয় ও পাকিস্তানি নায়ক-নায়িকাদের নামে বিভিন্ন পোশাক প্রতিটি দোকানে শোভা পাচ্ছে। এর মধ্যে মেয়েদের পোশাকে রয়েছে সায়ারা, মারাঠা, মিঠাই, পুস্পারাজ, কুইন ফ্রক, গুজরাটি, গারারা, লেহেঙ্গা, পাকিস্তানি কুর্তি। আর ছেলেদের পোশাকের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানি কুবলি, শেরওয়ানি, পাঞ্জাবিসহ হরেক নামের পোশাক।
বিভিন্ন বিপণিবিতান ঘুরে দেখা যায়, ২০ রোজার পর পোশাক কিনতে এসে ক্রেতারা হিমশিম খাচ্ছেন। কারণ পছন্দের পোশাকটি কিনতে চাইলেও ক্রেতাদের দিতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। তবে দোকানের বাহারি পোশাকের প্রতি মানুষের আকর্ষণ একটু কম। কারণ প্রচণ্ড গরমে এবারের ইদে ক্রেতাদের প্রথম পছন্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে সুতি কাপড়ের পোশাক।
মেহেরপুর শহরের বড়বাজারের মিল্টন ফ্যাশন হাউসের স্বত্বাধিকারী মিল্টন হোসেন বলেন, ‘করোনার কারণে গত দুই বছর তেমন একটা ব্যবসা করতে পারিনি। তবে এবার আগেভাগেই ভারত ও ঢাকা থেকে মালামাল দোকানে তুলেছি। প্রথম থেকেই বেচাকেনা ভালো। ২০ রোজার পর দোকানে ক্রেতাদের প্রচণ্ড চাপ বেড়েছে। এবারের বেচাকেনায় আমরা সন্তুষ্ট।’
শহরের চন্দ্রবিন্দু ফ্যাশন হাউসের স্বত্বাধিকারী মানিক হোসেন জানান, এবার প্রচণ্ড গরমে ঈদ হওয়ায় ক্রেতাদের চোখ বাহারি পোশাকে নয়, সুতির পোশাকে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা দোকানে পোশাক তুলেছি। এবার নতুন পোশাকের মধ্যে ছেলেদের পুষ্পা প্যান্ট বিক্রি বেশি হচ্ছে।
এ বিষয়ে মেহেরপুর শহরের কাশ্যবপাড়ার সুমন বলেন, ‘ঈদের পোশাক কিনতে এসেছিলাম। শার্ট, প্যান্ট আর পাঞ্জাবি কিনেছি। সব দেশি পোশাক নিয়েছি। আমাদের দেশের পোশাক বেশ মানসম্মত। আর দেশীয় পণ্য কেনা একটা অহংকারের বিষয়। তবে অন্যবারের তুলনায় এবার পোশাকের দামটা একটু বেশি। প্রতিটি পোশাকেই অন্যবারের তুলনায় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি নিচ্ছে। ফলে বাজারে এসে আয়ের সঙ্গে ব্যয় মেলাতে পারছি না। ঈদ বলে কথা। ধার-দেনা করে হলেও পরিবারের সদস্যদের জন্য নতুন পোশাক কিনেছি।’
শহরের গড়পাড়ার সুখি ইসলাম জানান, এবারের ঈদের বাজারে শিশুদের পোশাকের দাম সবচেয়ে বাড়তি। প্রতিটি পোশাকের দাম আকাশছোঁয়া। গেলবার যে পোশাক ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় কিনেছি, সেই পোশাক এবার কিনতে হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা দিয়ে।
বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান দিপু বলেন, ‘বাজারে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো। মানুষ ঝামেলামুক্ত হয়ে বাজার করতে পারছে। কোনো চাঁদাবাজি নেই। ব্যবসায়ীরাও স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবসা করতে পারছেন। আমাদের মোকাম থেকেই প্রতিটি পণ্য বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ফলে ক্রেতাদের কাছে একটু বেশি দামে পোশাক বিক্রি করতে হচ্ছে।’