যশোরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ৮০ লাখ পিস নিষিদ্ধ আফ্রিকান মাগুর মাছ ধ্বংস করা হয়েছে। নিষিদ্ধ এই পোনা উৎপাদন ও মাছ চাষের অভিযোগে হ্যাচারির দুই মালিককে জরিমানা এবং পুকুরের মালিককে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।
সোমবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে যশোর সদর উপজেলার কাজীপুর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান পরিচালিত হয়। যশোর র্যাব-৬ ও উপজেলা মৎস্য অফিসের যৌথ অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনুপ দাশ।
দণ্ডপ্রাপ্ত দুই হ্যাচারি মালিক যশোর সদর উপজেলার কাজীপুর এলাকার মৃত মফিজ মিস্ত্রির মেয়ে রাহেলা খাতুন ও আকবর আলীর মেয়ে সাহিনা খাতুনকে ১ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, একই এলাকার পুকুর মালিক মৃত সাখাওয়াতের ছেলে সালাম হোসেনকে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডসহ ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন ও র্যাব সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব জানতে পারে, সদর উপজেলার কাজীপুর এলাকার বিভিন্ন জাতের মাছের রেণু ও পোনা উৎপাদনের আড়ালে অবৈধ আফ্রিকান মাগুর মাছের রেণু ও পোনা উৎপাদন করা হচ্ছে। একই এলাকার আরেক পুকুরে মাছ চাষের আড়ালে আফ্রিকান মাগুর মাছ মজুত করা হয়েছে। অভিযান চালালে অভিযোগের সত্যতা মেলে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জব্দকৃত ৮০ লাখ রেণু-পোনা ও ১ লাখ ছোট পোনা মজুতের দায়ে হ্যাচারির দুই মালিককে অর্থদণ্ড দেন। আর ২৮০ কেজি বড় মাছ মজুতের দায়ে পুকুরের মালিককে জরিমানা ও কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
যশোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনুপ দাশ জানান, ২০১৪ সাল থেকে আফ্রিকান মাগুরের আমদানি, উৎপাদন, বিপণনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। কারণ এই মাছ চাষের ফলে দেশি প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। পুকুর বা অবরুদ্ধ জলাশয় থেকে এই মাছ নদীতে বা মুক্ত জলাশয়ে এলে বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদের জন্য মহাবিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
অভিযানে র্যাব-৬ যশোরের কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম নাজিউর রহমান, সদর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা সাইদুর রহমান রেজাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে আফ্রিকান মাগুর মাছের পোনাগুলো ধ্বংস করা হয়েছে।