জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠনের নেতা মোতালেব শিকদারকে (৪০) গুলি করে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার তানিয়া তন্বীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার আসামি তানিয়াকে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১-এর মো. আসাদুর জামানের আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গ্রেপ্তার তানিয়া তন্বী এনসিপির যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তির খুলনা জেলার যুগ্ম সদস্যসচিব।
এদিকে গ্রেপ্তার তানিয়া দেড় মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে দাবি করেছেন। তাঁর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের প্রিজন সেলে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিবির ওসি তৈয়মুর ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ’মামলার নথি এলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গ্রেপ্তার হওয়া তানিয়া তন্বী অন্তঃসত্ত্বা কি না, বিষয়টি হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে।’
এর আগে সোমবার নগরীর সোনাডাঙ্গা আল আকসা মসজিদ সরণির ১০৯ নম্বর রোডের মুক্তা হাউসের নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে মোতালেব শিকদারকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্ত্রীর করা মামলায় তন্বীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে সোনাডাঙ্গা মডেল থানা থেকে মামলাটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়।
এ বিষয়ে কেএমপির উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার মোতালেব শিকদারের স্ত্রী ফাহিমা আক্তার বাদী হয়ে ছয়-সাতজন অজ্ঞাতনামা আসামির নামে মামলা করেছেন। এই মামলায় আটক তানিয়া তন্বীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া তানিয়া অন্তঃসত্ত্বা থাকার কথা বলেছেন এবং অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সব রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে, তিনি অন্তঃসত্ত্বা কি না।
মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার দিন ওই ফ্ল্যাটে এবং আশপাশে মোতালেব শিকদার, তানিয়া তন্বী, তাঁর স্বামী তানভীর শেখসহ ১০ জন উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে একটি শীর্ষ সন্ত্রাসী সংগঠনের কয়েকজন সদস্যের উপস্থিত থাকার বিষয়ে তথ্য পাচ্ছি।
চাঁদাবাজি, মাদক (ইয়াবা) ভাগ-বাঁটোয়ারার বিষয়গুলো নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। মোতালেব শিকদার, তানিয়া তন্বী এবং তাঁর স্বামী তানভীর শেখ নিয়মিত মাদক সেবন করতেন। মোতালেব শিকদারের ব্যাপারেও আলাদা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
গুলিবিদ্ধ মোতালেব শিকদার প্রসঙ্গে কেএমপির এই উপপুলিশ কমিশনার বলেন, ‘আহত মোতালেব শিকদারের কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। সোমবার আহত হওয়ার পর সে পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছে। কিন্তু এখন সে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ভান করছে। সে পুলিশ দেখলেই বোবা হয়ে যাচ্ছে।
ইশারা ও অঙ্গভঙ্গি দিয়ে কথা বলছে। কোনো কথা জিজ্ঞেস করলে কলম দিয়ে আঁকাবাঁকা কী সব খাতায় লিখে দিচ্ছে, আমরা বুঝতে পারছি না। সে সুস্থ হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর থেকে তন্বীর স্বামী তানভীর শেখ পলাতক রয়েছেন। তানভীরসহ অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব কাজ করছে।