যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কামরুজ্জামান হত্যা মামলায় ওসমান গণি ও আলী হোসেন নামের দুই ভাইকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক জুয়েল অধিকারী এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের ছোট পোদাউলিয়া গ্রামের ছবেদ আলী সরদারের ছেলে ওসমান গণি ও আলী হোসেন।
এ মামলার অপর আসামি দণ্ডপ্রাপ্ত ওসমান গণির স্ত্রী খাদিজা খাতুনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত পিপি আজিজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণ মতে, ছোট পোদাউলিয়া গ্রামের নুরুল হকের ছেলে কামরুজ্জামানের সঙ্গে তাঁর চাচাতো ভাই ওসমান গণি ও আলী হোসেনের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। ২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নিজের জমিতে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণকে কেন্দ্র করে কামরুজ্জামানের সঙ্গে ওসমান গণি ও আলী হোসেনের বাগ্বিতণ্ডা হয়।
একপর্যায়ে ওসমান গণি ও আলী হোসেন বাড়ি থেকে ধারালো দা এনে কামরুজ্জামানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর বড় ভাইয়ের স্ত্রী আনোয়ারা, ছোট ভাইয়ের স্ত্রী পারভীন ও ভাইপো আতাউর রহমানও হামলার শিকার হন। ওই চারজনকে কুপিয়ে জখম করে ওসমান ও আলী হোসেন পালিয়ে যান।
পরে স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চারজনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতালে আনার পর কামরুজ্জামানের মৃত্যু হয়। আহত তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত কামরুজ্জামানের বাবা রুহুল আমিন সরদার থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২৪ সালের ৩ জুলাই ঝিকরগাছা থানার উপপরিদর্শক বনি ইসরাইল আদালতে চার্জশিট জমা দেন। ওসমান ও আলী হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আজ সোমবার তাঁদের ফাঁসির আদেশ ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া ওসমানের স্ত্রী খাদিজা খাতুনকে খালাস দেওয়া হয়।
পিপি আজিজুল ইসলাম বলেন, হত্যা মামলায় দুই বছরের মাথায় রায় দেওয়া নজিরবিহীন। সরকার পক্ষ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
অন্যদিকে, আসামিপক্ষ দাবি করেছে যে তাঁরা ন্যায়বিচার পাননি এবং উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।