যশোরের অভয়নগরে শ্রেণিকক্ষে ইসলাম ধর্মের নবীদের নিয়ে অবমাননাকর কথা বলার অভিযোগে এক সহকারী শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ।
আজ রোববার দুপুরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নিউটন সরকার নামে ওই শিক্ষক উপজেলার দেয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী শিক্ষক। তিনি যশোরের মণিরামপুর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের দিলীপ সরকারের ছেলে।
আজ দুপুরে দেয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, এলাকাবাসী ও বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের নেতা কর্মীরা জড়ো হয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন।
৮ম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার (২৫ জানুয়ারি) জীববিজ্ঞান ক্লাস নেওয়ার সময় শিক্ষক নিউটন সরকার ইসলাম ধর্মের নবীদের নিয়ে অবমাননাকর কথা বলেন। বিবর্তনবাদ নিয়েও কথা বলেন তিনি। এ ঘটনার পর ওই শিক্ষককে বরখাস্তের দাবি করলে প্রধান শিক্ষক বিষয়টি দেখবেন বলে শিক্ষার্থীদের বাড়ি চলে যেতে বলেন।
পরদিন বৃহস্পতিবার সরস্বতী পূজা, শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকায় স্কুল বন্ধ ছিল। আজ স্কুল খোলার পর নিউটন সরকারের শাস্তির দাবিতে সব শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ক্লাস থেকে বেরিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে অভিভাবক, এলাকাবাসী ও বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের নেতা কর্মীরা মাঠে উপস্থিত হয়।
দুপুরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের অংশগ্রহণে জরুরি সভা হয়। সভা শেষে নিউটন সরকারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে ঘোষণা দেওয়া হলে আন্দোলন স্থগিত করা হয়।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি লুৎফর রহমান জানান, সহকারী শিক্ষক নিউটন সরকারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষক নিউটন সরকার নবীদের কটূক্তি করার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘গত বুধবার ৮ম শ্রেণির বিজ্ঞান ক্লাসে বিজ্ঞানের বাস্তবতা সম্পর্কে কথা বলেছি। দেব–দেবী ও নবীদের শ্রদ্ধা এবং বিশ্বাসের সঙ্গে সম্মান দেওয়ার কথা বলেছিলাম। শিক্ষার্থীরা আমার কথা পরিবর্তন করেছে। কেন বা কী কারণে তারা এমন করেছে আমি বুঝতে পারছি না। ধর্মীয় বিষয়ে কথা বলা আমার ভুল হয়েছে।’
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম গোলাম আযম বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছি। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’