ঝিনাইদহ সদরের হুদা-ধনঞ্জয়পুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ ও বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত থেমে থেমে এ সংঘর্ষ চলে।
আহতদের মধ্যে আনারুল ইসলাম (৪৫) ও মনিরুল ইসলাম (৩৭) নামের দুজনকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ টহল দিচ্ছে। তবে এ ঘটনায় এখনো থানায় কোনো মামলা হয়নি এবং কোনো আটকের ঘটনা ঘটেনি।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ফুরসুন্দি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক জাহিদ বিশ্বাস এবং ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি শাহাবুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি স্থানীয় কিছু লোক বিএনপিতে যোগ দেন।
এ নিয়ে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে কয়েক দিন আগে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকালে উভয় পক্ষের সমর্থকেরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র, ঢাল, সুরকি নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে ১০ জন আহত হন এবং ভাঙচুর করা হয় আল আমিন, আদরী বেগমসহ উভয় পক্ষের তিনটি বাড়ি।
ভুক্তভোগী আল আমিনের বাড়িতে গিয়ে কাউকেই পাওয়া যায়নি। তাঁর পার্শ্ববর্তী ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিক আদরী বেগম বলেন, ‘সকালে হঠাৎ করেই অনেক মানুষ এসে হামলা ও মারামারি শুরু করে। একপর্যায়ে পাশের বাড়ির ছাদে উঠে নারী ও পুরুষেরা ইট নিক্ষেপ করতে থাকে আমার বাড়িতে। এতে বাড়ির চালার টিন ভেঙে যায়। পাশের একটি ভাঙা ঘরও আবার ভেঙেছে তারা। কেউ প্রতিবাদ করতে পারেনি। নারীদের গলায়ও রামদা ধরে ছিল। খুবই ভয়ে মধ্যে ছিলাম ওই সময়টুকু।’
জানতে চাইলে ফুরসুন্দি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক জাহিদ বিশ্বাস বলেন, ‘এখানে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এসব ঘটনা ঘটছে। এক মাস ধরে বিপরীত পক্ষ এসব করে বেড়াচ্ছে। এখানে আমাদের তো কোনো দোষ নেই। শাহাবুররা দলে লোকজন নিয়ে এসব করে বেড়াচ্ছে।’
ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি শাহাবুর রহমান বলেন, ‘কয়েক মাস ধরেই এমন হামলার চেষ্টা চলছে। ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষ্মীপুর গ্রামের কিছু মানুষ অন্য দল থেকে বিএনপিতে যোগ দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যায়। এটা তাদের সহ্য হচ্ছিল না। যে কারণে জাহিদ বিশ্বাস তার লোকজন নিয়ে এদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে, কেন আমাদের সঙ্গে আসল। মূলত এসব বিষয় নিয়েই সকালে তারা আমাদের সমর্থকদের ওপর হামলা করে।’
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘দুই পক্ষের মধ্যে সামাজিক আধিপত্য বিস্তারের জেরে ঘটনাটি ঘটেছে। কয়েক মাস ধরেই বিরোধ বিদ্যমান ছিল। সকালে সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকাটিতে অতিরিক্ত পুলিশ টহল দিচ্ছে।’