হোম > সারা দেশ > দিনাজপুর

ডেটোনেটর বিস্ফোরণে কবজি উড়ে গেল শিশুর

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 

বড়পুকুরিয়া খনির পূর্ব পাশে প্রাচীর ঘেঁষে ডাম্পিং এরিয়া থেকে কয়লা সংগ্রহ করছেন স্থানীয় লোকজন। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির পাশে পরিত্যক্ত ডেটোনেটর (এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বিস্ফোরণে এক শিশুর ডান কবজি উড়ে গেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি-সংলগ্ন চৌহাটি গ্রামে এই দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটে। আহত শিশুর নাম ইলিয়াস (১০)। সে চৌহাটি গ্রামের বাসিন্দা আশরাফুল ইসলামের ছেলে ও স্থানীয় একটি মাদ্রাসার নাজরা শ্রেণির শিক্ষার্থী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুর ১২টার দিকে কয়লাখনি এলাকার ডাম্পিং এলাকা থেকে শিশু ইলিয়াস একটি ধাতব বস্তু পেয়ে কৌতূহলবশত তা নাড়াচাড়া করতে করতে বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর মোবাইলের নষ্ট ব্যাটারির সঙ্গে সংযোগ দিলে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে তার ডান কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে আঙুল খুলে পড়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত হয়।

পরিবারের সদস্যরা রক্তাক্ত অবস্থায় তাৎক্ষণিক তাকে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। বর্তমানে সে সেখানে চিকিৎসারত রয়েছে।

ইলিয়াসের বাবা আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘সে খনির পাশ থেকে ওই সব ধাতব পদার্থ কুড়িয়ে এনে বাড়িতে খেলছিল। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে দৌড়ে গিয়ে দেখি, আমার ছেলের ডান হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাচ্ছে। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’

সরেজমিনে জানা গেছে, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির পূর্ব পাশে প্রাচীর ঘেঁষে কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা খনির ডাম্পিং এরিয়া রয়েছে। সেখানে খনির বিভিন্ন উচ্ছিষ্টসহ সব ধরনের বর্জ্য ফেলা হয়। এসব বর্জ্য থেকে কয়লার সন্ধানে এলাকার লোকজন ওই ডাম্পিং এরিয়ায় প্রবেশ করে কয়লা সংগ্রহ করে তা বিক্রি করেন। এসব বর্জ্যের সঙ্গে মাঝেমধ্যে এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস মেলে। খনির পার্শ্ববর্তী গ্রাম চৌহাটির অনেকেই এই ডাম্পিং পয়েন্ট থেকে কয়লা সংগ্রহ করতে গিয়ে ওইসব এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস পেয়ে থাকেন। তাঁরা এর বিশদ কিছু জানেন না। অনেক সময় শিশুরা এসব বাড়িতে এনে খেলে।

খনি এলাকায় পরিত্যক্ত ডেটোনেটর। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ভূগর্ভস্থ এক শ্রমিক বলেন, ‘এগুলো ডেটোনেটর। খনির ভূগর্ভে যেসব স্থানে মেশিন দিয়ে কয়লা কাটা সম্ভব হয় না, সেসব স্থানে এসব ডেটোনেটর স্থাপন করে ৫০ মিটার দূরত্ব বজায় রেখে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কয়লা সংগ্রহ করা হয়।’

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, খনি কর্তৃপক্ষের অসতর্কতার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। এসব দ্রব্য কীভাবে সহজেই মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে, সেটি খনি কর্তৃপক্ষের দেখা দরকার। এমন দুর্ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে জন্য খনির ব্যবহৃত বিস্ফোরক উপাদান ও পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি অপসারণে প্রশাসনের আরও সাবধান হওয়াসহ তৎপর হতে হবে।

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) খান মো. জাফর সাদিক বলেন, ‘খনির ভূগর্ভে কয়লা উত্তোলনের ক্ষেত্রে বিস্ফোরণের কাজে ডেটোনেটর ব্যবহার করা হয়। এগুলো খুবই স্পর্শকাতর। এগুলো কোনটি অকেজো ও কোনটি তাজা, তা সাধারণভাবে কারও বুঝতে পারার কথা নয়। তা ছাড়া খনির বাইরে প্রাপ্ত ডেটোনেটরে কোনো সংযোগ নেই। তবে এগুলো ডাম্পিং পয়েন্ট থেকে কোনো না কোনোভাবে ধাতব বস্তু হিসেবে গ্রামবাসী সংগ্রহ করেছেন। বিষয়টি আগে কেউ আমাদের নজরে আনেনি। ঘটনার পর আমরা জনতে পেরেছি, বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি।’

এই কর্মকর্তা জানান, ডেটোনেটর বিস্ফোরণের বিষয়ে ইতিমধ্যে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আহত শিশুর বিষয়ে তিনি বলেন, আগে তার চিকিৎসা চলুক। পরে তার বিষয়ে খনি কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে এবং তার পাশে থাকবে।

কৃষকের ঘরে ১২ ফুট লম্বা গাঁজার গাছ, আটক

চিরিরবন্দরে বাসচাপায় দুই নারী ভ্যানযাত্রী নিহত

ফুলবাড়ীতে যুবদল নেতার বহিষ্কার দাবি

হিলি সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফের ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে বৈঠক

মেডিকেল ভর্তিতে মানবিক গুণাবলি যাচাই করা হবে: স্বাস্থ্যশিক্ষা মহাপরিচালক

খানসামায় শিল্পকলা একাডেমির অস্থায়ী কার্যালয় উদ্বোধন

বাড়ির পাশের বাগানে মিলল সাবেক ইউপি সদস্যের লাশ

সুগন্ধি ধানে পোকার আক্রমণে দিশেহারা কৃষক, উৎপাদন খরচ নিয়ে শঙ্কা

মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র: উদ্বোধনের ৪ বছরেও চালু হয়নি

চোলাই মদ খাওয়ার দায়ে নারীসহ চারজনের কারাদণ্ড