রাজধানীর উত্তরখান থানার মাউসাইদ পূর্বপাড়ার বাসিন্দা সহকারী আনসার অ্যাডজুট্যান্ট মো. নাছির উল্লাহ খান হত্যা মামলায় দুই আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান আজ বুধবার এ রায় দেন। রায়ে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় বাকি ১০ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—আরব আলী হাওলাদার ওরফে ডাকাত আলী ও রহমান খা। কারাদণ্ড ছাড়াও তাঁদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে প্রত্যেককে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে বলা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি আবু আব্দুল্লাহ ভূঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁদের সাজা দেওয়া হয়েছে। বাকি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।’
খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—মো. সালাম, নুরুল ইসলাম তালুকদার ওরফে নুরা তালুকদার ওরফে গরুচোর নুরা, গোলাম মোস্তফা ওরফে গোলাম মোস্তফা খা, রেজাউল ব্যাপারী ওরফে রেজু ব্যাপারী, লিটন হাওলাদার, মো. জালাল খা, মিজান মোল্লা, সহি সরদার, ইয়ামিন ব্যাপারী, ফজলুল করিম সরকার।
বিচার চলাকালে দুই আসামি রেজাউল করিম হাওলাদার ও শেখ আবু মারা যাওয়ায় তাদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উত্তরখান থানার মাউসাইদ পূর্বপাড়ার সহকারী আনসার অ্যাডজুট্যান্ট মো. নাছির উল্লাহ খানের বাড়ি ঘেরাও করে দুর্ধর্ষ ডাকাতদল। তারা বাইরে থেকে জানালা দিয়ে মো. নাছির উল্লাহ খানকে গুলি করে গুরুতর আহত করে এবং ঘরের গেটের তালা ও মূল দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে।
এরপর নাছিরের চিৎকারে স্ত্রী আবেদা সুলতানা ও মেয়ে নুসরাত জাহান বৃষ্টি ঘরে আসেন। তখন ডাকাতরা তাঁদেরও মারপিট করে এবং ভয়ভীতি দেখায়। ডাকাতেরা আহত নাছির উল্লাহ খানকে পুনরায় ড্রয়িং রুমে নিয়ে গুলি করে ও ঘরের আলমারি ভেঙে নগদ ৪০ হাজার টাকা, দুটি মোবাইল সেট ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় দুই লাখ ৭১ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায়।
গুরুতর আহত নাছির উল্লাহ খানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত নাছির উল্লাহ খানের ছোট ভাই মো. শামসুদ্দিন খান বাদী হয়ে উত্তরখান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তকালে আসামি শেখ আবুকে গ্রেপ্তার করে এবং তাঁর কাছ থেকে ডাকাতির মালামাল মোবাইল সেট উদ্ধার করে। মামলার তদন্তকালে আসামি রেজাউল করিম, মো. সালাম, শেখ আবু, রহমান খা ও আসামি আরব আলী হাওলাদার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
২০০৯ সালের ৩০ এপ্রিল ১৪ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। মামলা চলাকালে ২৩ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।