ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের হাতিরঝিল থানা হেফাজতে থাকা চুরির মামলার এক আসামির মৃত্যু হয়েছে। নিহত আসামির স্বজনেরা পুলিশের নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ করছেন।
নিহত ব্যক্তির নাম রুম্মন শেখ ওরফে সুমন (২৭)। তিনি পিওরইট ওয়াটার ফিল্টার কোম্পানিতে ডেলিভারি ম্যান হিসেবে কাজ করতেন।
খবর পাওয়ার পর বিক্ষুব্ধ স্বজনেরা হাতিরঝিল থানার সামনে বিক্ষোভ করেন। থানার পার্শ্ববর্তী সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে মরদেহ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। বিকেল ৫টার দিকে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়।
থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ আগস্ট সুমনের বিরুদ্ধে ৫৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও প্রমাণ লোপাট করতে একই প্রতিষ্ঠানে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক চুরির অভিযোগে মামলা করা হয়। মামলাটির তদন্ত করছেন হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আদনান বীন আজাদ। গত ১৯ আগস্ট তিনিই সুমনকে বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেন।
এটি আত্মহত্যা নয়, পুলিশের অবহেলা ও হত্যা উল্লেখ করে সুমনের শ্যালক সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ভাইকে গত শুক্রবার (১৯ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে থানার পুলিশ ও তাঁর অফিসের ম্যানেজার অফিসে যাওয়ার কথা বলে নিয়ে আসে। আমরা তখন বলি, আজ শুক্রবার অফিস বন্ধ। কিন্তু তারা শোনে নাই। পরে পুলিশ আমার ভাইকে থানায় এনে আটকে রাখে। আমরা দেখা করতে এলে দেখা করতে দেয়নি। আজ সকালে ভাইয়ের জন্য পরোটা, ডিম, ভাজি কিনে নিয়ে আসি। তখনো আমাদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি। দুপুর ১২টার দিকে আমাদের বলা হয় আদালতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আদালতে গিয়ে দেখি বন্ধ।’
সাইফুল অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ভাই রাত ৩টা ২৮ মিনিট পর্যন্ত জীবিত ছিল। এরপর কী হয়েছে সে বিষয় কিছু বলছে না পুলিশ। থানা পুলিশ থানা পুলিশ অন্যায়ভাবে নির্যাতন করে ভাইকে মেরেছে। আমার ভাই ওই অফিসে চাকরি ছেড়ে দিতে চাওয়াই কাল হলো! অফিসের লোকজনের সহযোগিতায় পুলিশ এমন কাজ করল। আমার ভাইয়ের কোনো দোষ ছিল না।’
সুমন স্ত্রী জান্নাতকে নিয়ে রামপুরা হাই স্কুল গলিতে একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। গত ১৯ আগস্ট সেই বাসা থেকেই তাঁকে ধরে নিয়ে যায় হাতিরঝিল থানা পুলিশ।