রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকায় যে দুই তরুণ-তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁরা দুজনই নিখোঁজ ছিলেন। এ ঘটনায় গত ২৭ অক্টোবর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়েছিল।
আজ রোববার (২ নভেম্বর) দুপুরে উত্তর বাড্ডার পূর্বাঞ্চল ২ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাড়ি থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন সাইফুল ইসলাম (২৪) ও শাকিলা আক্তার (২০)।
তিনতলা বাড়িটির তৃতীয় তলায় ইবনে কাসীর ক্যাডেট মাদ্রাসা, দ্বিতীয় তলায় বাড়ির মালিক আতিক পরিবারসহ থাকেন। নিচতলায় পরিত্যক্ত পোশাক কারখানায় পাওয়া যায় লাশ দুটি।
নিহত সাইফুল ইসলাম ওই মাদ্রাসার কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক) ছিলেন। তিনি বরিশালের হিজলা উপজেলার বাসিন্দা। নিহত শাকিলা আক্তার (২০) একই মাদ্রাসায় রান্না ও পরিচ্ছন্নতার কাজ করতেন। তাঁর বাড়ি মৌলভীবাজারে।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, চার-পাঁচ দিন আগে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। তবে এটি হত্যা, না আত্মহত্যা, তা তাৎক্ষণিক নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা আলিম উদ্দিন বলেন, ‘শাকিলা মাদ্রাসায় রান্না করত। আর সাইফুল কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করত। সব চাবি তাঁর কাছেই থাকত। ২৬ অক্টোবর সকালে মাদ্রাসা বন্ধ দেখে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা আমাদের ফোন দেয়। আমরা বিকল্প চাবি দিয়ে মাদ্রাসা খুলে পাঠদান শুরু করি। কিন্তু সাইফুলের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তার মোবাইল ফোন খোলা থাকলেও, তা ধরেনি।’
আলিম উদ্দিন আরও বলেন, ওই দিনই সাইফুলের নিখোঁজের বিষয়ে তাঁর পরিবার ও পুলিশকে জানানো হয়। এর মধ্যে শাকিলার মা এসে জানান, মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছেন না। দুজনের নিখোঁজের বিষয়ে ২৭ অক্টোবর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন শাকিলার মা।
বাড়ির মালিক আতিক জানান, কয়েক দিন আগে তাঁর স্ত্রী মারা যান। তিনি গ্রামের বাড়িতে ছিলেন। ঢাকায় ফিরে বাড়িতে দুর্গন্ধ পেয়ে প্রথমে মৃত ইঁদুর ভেবে পরিষ্কার করান। কিন্তু গন্ধ না কমায় নিচতলার পরিত্যক্ত কারখানায় পরিষ্কার করতে পাঠান কেয়ারটেকার সুলতান আহমেদকে। তিনিই প্রথম লাশ দুটি দেখতে পান এবং পুলিশে খবর দেন।
বাড়ির সিসি ক্যামেরাগুলো অচল থাকায় ঘটনার কোনো দৃশ্য পাওয়া যায়নি। পুলিশের ভাষ্যমতে, নিচতলার কারখানায় ‘টিপ’ তালা দেওয়া ছিল, যা ভেতর ও বাইরে—দুদিক থেকেই লাগানো যায়।
বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, দুজনের লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশ গলে যাওয়ায় শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে কি না, তা বোঝা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।