ফরিদপুরে একই নম্বরের ৫টি প্রাইভেট কার আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার শহরের গোয়ালচামটে পুরোনো বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে প্রাইভেট কারগুলো আটক করা হয়। ঘটনা জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেটিজেনদের মধ্যে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়।
তবে ট্রাফিক পুলিশ বলছে, গাড়িগুলোর শোরুম নম্বর হলেও বেআইনিভাবে সড়কে চালিয়ে ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করায় আটক করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার দিবাগত রাতে ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামটে পুরোনো বাসস্ট্যান্ড এলাকার হোটেল রাজস্থানের সামনে একই মডেলের (সিএইচআর) ৫টি প্রাইভেট কার এসে থামে। প্রতিটি গাড়ির প্লেট নম্বর ছিল ঢাকা মেট্রো-শ-০০-৭৩৮ (যা শোরুম রেজিস্ট্রেশন নম্বর)। গাড়িতে থাকা ১৬ জন ব্যক্তি রাতে ওই হোটেলে অবস্থান করেন।
বৃহস্পতিবার সকালে একই নম্বরের ৫টি গাড়ি দেখে লোকজনের মধ্যে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে তড়িঘড়ি করে গাড়ির লোকজন হোটেল থেকে চলে যান।
খবর পেয়ে পুলিশ এসে গাড়ির মূল মালিক এবং কাগজপত্র না পেয়ে গাড়িগুলো থানা হেফাজতে নিয়ে যায়। তবে আজ শুক্রবার পর্যন্ত গাড়ির কাগজপত্র নিয়ে মালিকপক্ষ আসেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে। বর্তমানে গাড়িগুলো ফরিদপুর পুলিশ লাইনসে রাখা হয়েছে।
জানতে চাইলে হোটেল রাজস্থানের ম্যানেজার মহিউদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাতে গাড়িতে আসা ১৬ জন ব্যক্তি হোটেলে অবস্থান নেন। তাঁরা ঢাকা থেকে ফরিদপুর শহরে একটি হোটেল উদ্বোধন করতে এসেছিলেন।’
এ বিষয়ে ফরিদপুর পুলিশের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই-প্রশাসন) মো. খুরশীদ আলম বলেন, গাড়িগুলোর নম্বর মূলত গ্যারেজ বা শোরুমের। এই নম্বর ব্যবহার করে শুধু শোরুম থেকে বাসা এবং বাসা থেকে বিআরটিএ (বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি) কার্যালয় পর্যন্ত বা পোর্ট থেকে শোরুম পর্যন্ত চালিয়ে যেতে পারবে।
কিন্তু গাড়িগুলো ব্যবহার করে বেআইনিভাবে তাঁরা ঢাকা থেকে ফরিদপুরে এসেছিলেন। মূলত বিআরটিএ কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন না করে ঘুরতে বের হওয়ার কারণেই আটক করা হয়েছে।
আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে কি না জানতে চাইলে মো. খুরশীদ আলম বলেন, সঠিক কাগজপত্র হাতে না পাওয়া পর্যন্ত গাড়িগুলো ছাড়া যাবে না। মালিকপক্ষের পরিচয় পেলেও তাঁরা এখনো আসেনি। কিছু কাগজপত্র হাতে পেয়েছি, যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। যতক্ষণ পর্যন্ত দোষী প্রমাণিত না হবে ততক্ষণ আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া যাবে না এবং দোষী প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে গাড়িগুলো ব্যবহার করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, ‘গাড়িতে করে শহরের ঝিলটুলী এলাকায় তাঁদের এক বন্ধুর রেস্টুরেন্ট উদ্বোধন করতে এসেছিলেন। তাঁরা বিআরটিএতে টাকা জমা দিয়েছেন, তার প্রমাণও আমাদের দিয়েছেন এবং যাচাই-বাছাই শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’