হেলমেট না থাকায় আটকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কিছুটা ভুল-বোঝাবুঝি হয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের। গত সোমবার রাতের এই ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টির মীমাংসা করা হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম ইমদাদুল হক ইমন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ৫০তম (২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ) ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
জানা গেছে, গত সোমবার বিকেলে টিউশনি শেষে বাইকে করে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন ইমন। এ সময় তাঁর হেলমেট না থাকায় সাভারের পাকিজা এলাকায় সেনাসদস্যরা তাঁকে আটকান। এ সময় তাঁর সঙ্গে গাড়ির কাগজপত্রও ছিল না। এতে তাঁকে প্রায় ২ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং তাঁর এক ভাই সেনাবাহিনীতে কর্মরত আছেন বলে জানান তাঁদের। একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাঁকে মারধর করেন। এ ঘটনার জেরে সোমবার রাত পৌনে ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে সড়কের উভয় পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় আধা ঘণ্টা অবরোধ চলার পর সাভার অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ক্যাম্পাসে এসে বিষয়টি সমাধান করতে চাইলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। রাত পৌনে ১১টার দিকে অভিযুক্ত দুই সেনা কর্মকর্তাসহ সাভার অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ক্যাম্পাসে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও জাকসুর মধ্যস্থতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এ সময় তাঁরা সেনাবাহিনীর সদস্য কর্তৃক সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
আলোচনা শেষে ভুক্তভোগী ইমনের পক্ষ থেকে তাঁর চিকাৎসাসহ পাঁচটি দাবি উত্থাপন করেন জাকসুর ভিপি আব্দুর রশিদ জিতু। সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা তা মেনে নেন।
আলোচনায় উপস্থিত সেনাবাহিনীর সাভার স্টেশন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইনতেখাব হায়দার খান দাবিগুলো মেনে নেন এবং তার অগ্রগতি সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়কে অবহিত করবেন বলে জানান।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীর সঙ্গে যা ঘটেছে, সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সাভারে সেনাবাহিনীর দায়িত্বরত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং তাঁদের ক্যাম্পাসে এসে সমস্যাটি সমাধানের অনুরোধ করেছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাতে তাঁরা ক্যাম্পাসে আসেন এবং শিক্ষার্থীদের জানানো পাঁচটি দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন।’