রাজধানীর মালিবাগ এলাকার একটি বাসা থেকে সুরভী আক্তার মাহফুজা (২১) নামে এক গৃহবধূর বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে পলাতক তাঁর স্বামী আশিক মোল্লা।
গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে মালিবাগের বকশিবাগ এলাকার একটি বাসা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। আজ মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের জন্য সুরভীর মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায় পুলিশ।
সুরতহাল প্রতিবেদনে শাহজাহানপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মহসিন তালুকদার উল্লেখ করেন, সোমবার রাত ৯টার দিকে মালিবাগ বকশিবাগ এলাকার ৪৩৯ /এ নম্বর বাড়ির নিচতলা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। একটি মুখবাঁধা প্লাস্টিকের বস্তায় মরদেহটি ছিল।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, মরদেহের থুতনিতে, গলায়, বুক ও পিঠে লালচে দাগ রয়েছে। এ ছাড়া ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙুলে কাটা দাগ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, রোববার দিবাগত রাত ১টা থেকে সোমবার দুপুর ১টার মধ্যে যেকোনো সময় স্বামী আশিক মোল্লা তাঁকে হত্যা করে থাকতে পারে।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে সুরভী আক্তারের বড় ভাই হৃদয় খান জানান, তাঁদের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার জয়নগর গ্রামে। বাবার নাম নুরুল হক খান। ছয় বছর আগে সুরভীর বিয়ে হয় আশিক মোল্লার সঙ্গে। আশিক মোল্লা ঢাকার কেরানীগঞ্জে একটি টেইলার্সে কাজ করতেন। সেখানে সুরভীও কাজ করতেন। চার বছরে একটি ছেলে সন্তান রয়েছে তাঁদের।
তিনি আরও জানান, দুই বছর আগেও স্ত্রীকে ব্যাপক মারধর করেছিলেন আশিক। তখন আশিকের সঙ্গে থাকবেন না বলে জানালেও পরবর্তীতে আবার সংসার করতে রাজি হন সুরভী। এরপর থেকেই বাবা-মা ও ভাই-বোনের সঙ্গে আর যোগাযোগ ছিল না সুরভীর। সোমবার দুপুরে পুলিশের মাধ্যমে তাঁরা খবর পান। এরপর গ্রাম থেকে ঢাকায় এসে মালিবাগের ওই বাসায় এসে সুরভীর বস্তাবন্দী মরদেহ দেখতে পান।
এই ঘটনায় আশিকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে হৃদয় খান বলেন, সুরভী ও আশিক আগে কেরানীগঞ্জে বসবাস করতেন। গত ১ নভেম্বর তাঁরা মালিবাগের ওই বাসায় ভাড়া ওঠেন। যেদিন বাসায় উঠেছিলেন সেদিনই রাতে তাঁদের একমাত্র ছেলেকে দাদা-দাদির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর সুরভীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আশিক। পরবর্তীতে বালিশ চাপা দিয়ে অথবা কোনো কিছু খাইয়ে তাঁর বোনকে হত্যা করেছেন। হত্যার পর বস্তাবন্দী করে মরদেহ রেখে আশিক পালিয়ে গেছেন।