রাজধানীর শাহজাহানপুরের গুলবাগে যুবলীগের কর্মী অলিউল্লাহ রুবেলকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আজ শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান ডিবির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, ‘শাহজাহানপুরে যুবলীগের কর্মীকে যারা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে তাদের নাম আমরা পেয়েছি। এ ঘটনার সঙ্গে যারা সরাসরি জড়িত, যারা মোটরসাইকেলে এসে পাহারা দিয়েছে এবং যারা মেরে পালিয়েছে, তাদের নাম ও নম্বর আমরা পেয়েছি। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করব।’
যেহেতু টিপু হত্যাও একই এলাকায়, সেহেতু এ ঘটনার কোনো লিংক আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুটি ঘটনাই শাহজানপুর এলাকায়। আমরা যাদের নাম পেয়েছি, শিগগিরই গ্রেপ্তার করব। গ্রেপ্তারের পরে আমরা দেখব দুই ঘটনার মিল আছে কি না।’
পুরান ঢাকা এখনো আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করছে—এমন প্রশ্নের উত্তরে ডিবির প্রধান বলেন, ‘অনেকেই তো গ্রেপ্তার আছে। তারা জেলখানায় রয়েছে। আমরা বুঝতে পারি, জেলখানায় গিয়েও তারা সলাপরামর্শ করে। গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে এনে আমরা জিজ্ঞাসা করব আন্ডারওয়ার্ল্ডের কারা কারা এই কাজগুলো করে।’
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে গুলবাগ জোয়ারদার লেনের বাসার পাশের রাস্তায় রুবেলের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। পরিবারের লোকজন তাঁকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক রাত ২টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালে নিহতের ভগ্নিপতি মো. মামুন আহমেদ সিদ্দিকী জানান, তাঁদের বাসা রাজারবাগ জোয়ারদার লেন এলাকায়। রাতে রাজারবাগ এলাকা থেকে জোয়ারদার লেনে ভাড়া বাসায় ফিরছিলেন রুবেল। পথে বাসার অদূরে চার-পাঁচজন তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। খবর পেয়ে স্বজনেরা তাঁকে প্রথমে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। সবশেষ ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মামুন আরও জানান, রুবেল শাহজাহানপুর থানা ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক পদে ছিলেন। বর্তমানে যুবলীগের রাজনীতি করতেন। কিন্তু কোনো পদে ছিলেন না। এলাকায় তাঁর ইন্টারনেটের ব্যবসা রয়েছে। এ ছাড়া তেজগাঁও থেকে ডিম এনে শান্তিনগর, সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় সাপ্লাই দিতেন রুবেল। তাঁর স্ত্রী তানজিনা দেওয়ান কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তবে কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তা জানাতে পারেননি তিনি।
স্ত্রী ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে রাজারবাগ জোয়ারদার লেনের বাসায় ভাড়া থাকতেন রুবেল। তাঁর বাবার নাম শেখ নবী উল্লাহ খোকন। শান্তিবাগে তাঁদের নিজেদের বাড়ি রয়েছে।